শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও স্বল্পমূলধনী আজিজ পাইপসের ব্যবসা গত কয়েক বছর ধরে মন্দা। এরমধ্যে আবার দুই ব্যাংকের ঋণ আদায়ে আইনগত পদক্ষেপ চলমান। কোম্পানিটি এমনিতেই অর্থ সংকটে গত ১ মে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থায় কোম্পানিটির ভবিষ্যতে উৎপাদনে ফেরার সম্ভবনা খুবই ক্ষীণ।
আজিজ পাইপসের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানিটি কয়েক বছর ধরে লোকসানে রয়েছে। এতে করে পূঞ্জীভূত লোকসান হয়ে গেছে ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির ইক্যুইটি বা নিট সম্পদ ঋণাত্মক দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকায়। এ অবস্থার মধ্যে ঋণ আদায়ে ব্যাংকের আইনগত পদক্ষেপ বাড়তি চাঁপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোম্পানিটির ব্যবসা পরিচালনা বা টিকিয়ে রাখার সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানিটির আর্থিক হিসাবে ২৩ কোটি ৩১ লাখ টাকার স্থায়ী সম্পদ দেখানো হয়েছে। এরমধ্যে জমি, ভবন ও মেশিনারীজ ছাড়া অন্যসব স্থায়ী সম্পদের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি নিরীক্ষক।
এদিকে আর্থিক হিসাবে ৫ কোটি ৫১ লাখ টাকার মজুদ পণ্য দেখানো হয়েছে। তবে এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যবহার অনুপোযোগী। তারপরেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ হিসাব মান অনুযায়ি সঞ্চিতি গঠন করেনি।
বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে আজিজ পাইপসের ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। তবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তাদের তালিকা দিতে পারেননি। এছাড়া ওই ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকার মধ্যে ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা পাওনা ১ বছরের বেশি সময় ধরে আটকে আছে। তারপরেও সঞ্চিতি গঠন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
উত্তরা ব্যাংকের কাছে আজিজ পাইপসের ২২ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ঋণ নেওয়া রয়েছে। যা এখন বিচারাধীন। কোম্পানিটির কাছে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময়ে সুদসহ ৭২ কোটি ৫১ লাখ টাকা দাবি করে আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ডাচ-বাংলা ব্যাংকের প্রদত্ত ৭ কোটি ৫১ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে কোম্পানিটিতে। যে ঋণের বিপরীতে ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়কালীন ৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকা দাবি করে মামলা দায়ের করেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আজিজ পাইপসের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদদের মালিকানা ৮৮.৮৪ শতাংশ। কোম্পানিটির মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৫২.১০ টাকায়।
অপূর্ব