সুদহার বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের একটু কষ্ট হচ্ছে স্বীকার করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘আশা করি ব্যবসায়ী সমাজ এটা বুঝবেন, ব্যবসা একটু কঠিন হলেও তারা মেনে নিবেন। পরিস্থিতিকে গ্রহণ করবেন। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এটি করা দরকার ছিল। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে, অর্থনীতির বাইরে রজানৈতিক ব্যবস্থানাও।’

ব্যাংকিং খাতে আমানতকারীদের আস্থা কমে যাচ্ছে। সেই জায়গায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ জানতে চাওয়া সংক্রান্ত বিডা চেয়ারম্যানের প্রশ্নে আহসান মনসুর বলেন, ‘আস্থা ফেরাতে প্রথমত সুশাসন ও জবাবদিহীতার প্রতি জোর দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অপারেশনাল (পরিচালনা) সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করা হচ্ছে। এজন্য বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে।’’
সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত ওয়েবিনারে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এমন মন্তব্য করেন।
বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান চৌধুরী সঞ্চালানায় ‘‘স্টেট অব ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট বাংলাদেশ’’ শীর্ষক ওয়েবিনারে গভর্নর বলেন, অর্থনীতির ব্যবস্থাপনারা বাইরেও কিছু বিষয় আছে যা মূল্যস্পীতি নিয়ন্ত্রণে খুবই গুরুত্বপীর্ণ। ডলার বাজার সরবরাহ চ্যানেল এখন অনেকটা স্বস্তিদায়ক। ব্যালেন্স অব পেমেন্ট(বিওপি) এখন সন্তোষজনক অবস্থানে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা যেসব নীতিমালাগুলো নিচ্ছি তা টেকসই পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যাবে ভবিষ্যতে। একটু সময় লাগলেও আমরা একটি মাচ স্ট্রঙ্গার(খুব শক্তিশালী), অ্যাকাউন্টাবল(জবাবদিহিতামূলক) ও রেগুলেটেড(যথাযথভাবে পরিচালিত) ব্যাকিং সেক্টার পবো।’’
খেলাপী ঋণের পরিমাণ ব্যাংকিং খাতে দিন দিন বাড়ছে। এর কারণ ব্যাখ্যায় আহসান মনসুর বলেন, ‘‘ এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে, ব্যাংকিং খাতে এসএমই খাতে ঋণ গ্রহণযোগ্য স্থানে যায়নি। অনেক ব্যাংক এসএমই খাতে গুরুত্ব দেয়ায় তাদের খেলাপীর হার কমে গেছে।’’
ঋণ বিতরণের বেলায় গুণগত নিশ্চিত করতে সতর্ক করা হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 
ব্যাংকিং খাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করায় বেশ কয়েকটি ব্যাংকে তারল্য সংকট এখন দেখা দিয়েছে। বেসরকারি খাতের বড় একটি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের তারল্য সংকট হয় মন্তব্য করে আহসান মনসুর বলেন, ‘‘ব্যাংকটি এক সময়ে অনেক ভালো ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন সার্পোট দিচ্ছে, আশা করি তারা সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে। এরপর অন্যান্য শরীয়াহ ব্যাংকগুলো তখন সার্পোট পাবে এর কাছ থেকে।’’
অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় পণ্য সরবরাহের দিকটি দেখা হচেছ। রাজনৈতিক কারণেও অনেক সময় দর নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাজারে কিন্তু আলুর সরবরাহ আছে। দাম একটু বেশি হলেও পাওয়া যাচ্ছে। অনেক খাদ্য পণ্যর দাম কমে আসেছ। শিঘ্রই খাদ্য মূলস্ফীতি কমে আশানুরুপ হবে বলে মনে করছি।
বৈদেশিক বিনিয়োগ আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সহজ করছে। বিদেশি বিনিয়োগকারিরা মুনাফা ফিরিয়ে নিতে পারছেন আগাম অনুমোদন ছাড়াই বলে জানান গভর্নর।