৩০ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ
মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন আমদানিতে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে একটি মোটরবাইক উৎপাদনকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে। টাকার অঙ্কে শুল্ক ফাঁকির পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকা। জরিমানাসহ তা দাঁড়াবে ১০০ কোটি টাকায়।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এই শুল্ক ফাঁকির বিষয়টি ধরেছে। সেই সঙ্গে টাকা আদায়ের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) একটি বৈঠকও হয়েছে।
জানা যায়, দেশে উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক সুবিধা দিয়ে আসছে সরকার। এই বাড়তি শুল্কছাড়-সুবিধা পেতে হলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ইঞ্জিন তৈরির উপকরণ প্রস্তুত, আমদানি বা স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করে ইঞ্জিন তৈরি করতে হবে। যন্ত্রাংশ এনে দেশে ইঞ্জিন সংযোজন করলে শুল্ক হার কম। আর পুরো ইঞ্জিন আমদানি করলে শুল্ক হার বেশি।
কাস্টমস বলছে, র্যানকন চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পুরো ইঞ্জিন আমদানি করেছে। তবে শুল্ক সুবিধা নিয়েছে যন্ত্রাংশ আমদানির। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর গত ২৬ সেপ্টেম্বর কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে শুল্ক ফাঁকির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয়, সংশোধিত এসআরও জারি করার পর প্রতিষ্ঠানটি ১২৩টি পণ্য চালানের মাধ্যমে পুরো ইঞ্জিন আমদানি করেছে। এ ছাড়া ২৮টি চালান খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি শুল্ক সুবিধা নেওয়ার শর্ত লঙ্ঘন করায় স্বাভাবিক হারে পুনঃশুল্কায়ন বা শুল্কায়নের অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে। এসব চালানে ফাঁকি বা পরিহার করা শুল্ক-করের পরিমাণ আনুমানিক ৩০ কোটি টাকা বলেও উল্লেখ করা হয়।
নিয়মানুযায়ী, শুল্ক ফাঁকি হলে ন্যূনতম ২০০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে ফাঁকি, জরিমানাসহ প্রতিষ্ঠানটিকে সব মিলিয়ে প্রায় শতকোটি টাকা সরকারি রাজস্ব পরিশোধ করতে হতে পারে।
কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের চিঠি পাওয়ার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ র্যানকনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে শুল্ক আদায়ের জন্য দাবি নামার নোটিস জারি করে। মোট ১৫১টি দাবি নামা জারি করা হচ্ছে বলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। যেসব চালান খালাস নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর প্রতিটি চালানে কী পরিমাণ শুল্ক-কর কম পরিশোধ করা হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। দাবি নামা জারির ৩০ দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়।
এদিকে র্যানকন কর্তৃপক্ষ গত ৫ নভেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে। পরদিন তারা এনবিআর চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দিয়ে আগের সুবিধা আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর পর্যন্ত বহাল রাখার অনুরোধ জানায়। এ সুবিধা বহাল হলে র্যানকনকে বাড়তি শুল্ক-কর দিতে হবে না। এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের কারও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।