ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

কনটেনার ওঠানামা বাড়লেও কমেছে সার্বিক পণ্য পরিবহন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:১৯, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

কনটেনার ওঠানামা বাড়লেও কমেছে সার্বিক পণ্য পরিবহন

.

চট্টগ্রাম বন্দরে গত তিন মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে কনটেনার ওঠানামা। তবে এই সময়ে সার্বিক পণ্য ওঠানামা ও জাহাজ আসার সংখ্যা কমেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) হিসাবে, গত আগস্ট থেকে অক্টোবর বন্দরে মোট আট দশমিক ৩০ লাখ টিইইউএস কনটেনার ওঠানামা হয়েছে। পণ্যসহ ও খালি সব ধরনের কনটেনার এই হিসাবে আছে।
গত বছর একই সময়ে কনটেনার ওঠানামা হয়েছিল সাত দশমিক ৫৪ লাখ টিইইউএস। সেই হিসাবে কনটেনার ওঠানামা বেড়েছে ১০ দশমিক ২৮ শতাংশ। মোট কনটেনার ওঠানামার মধ্যে সাড়ে চার লাখ টিইইউএস আমদানি কনটেনার ও বাকিগুলো রপ্তানি কনটেনার। চবকের এই হিসাব তৈরি হয় জেটিতে জাহাজে ওঠানামা করা কনটেনারের সঙ্গে ঢাকার কমলাপুর আইসিডিতে ও কেরানীগঞ্জের পানগাঁও আইসিটিতে ওঠানামা করা কনটেনারের সংখ্যা যোগ করে।
বন্দর ব্যবহারকারীদের মতে, মধ্য জুলাই থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কনটেনার জট তৈরি হওয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কনটেনার পরিবহন ব্যাহত হয়। যেগুলো পরে ক্রমান্বয়ে পরিবহন করা হয়েছিল। এভাবেই পরের মাসগুলোয় কনটেনার ওঠানামার সংখ্যা বেড়েছে।
সোমবার পরিচালনাকারী সংস্থা জিবিএক্স লজিস্টিকসের হেড অব অপারেশনস মুনতাসির রুবায়াত বলেন, জুলাইয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেনার জট তৈরি হয়েছিল। ফলে জাহাজ থেকে কনটেনার ওঠানামার গতি ধীর হয়েছিল। ফলে, বহির্নোঙ্গরে অপেক্ষমাণ জাহাজের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। এ ছাড়াও, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচলে বিঘœ ঘটায় ওই সময়ে রপ্তানি পণ্যবাহী বিপুল সংখ্যক কনটেনার ঢাকার বিভিন্ন কারখানা ও চট্টগ্রামের বেসরকারি আইসিডিগুলোয় আটকা পড়েছিল।
তিনি জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব কনটেনার ক্রমান্বয়ে পরিবহন করা হয়। এভাবে পরবর্তী সপ্তাহগুলোয় বন্দরে কনটেনার পরিবহনের সংখ্যা বেড়ে যায়। বন্দর থেকে পাওয়া হিসাবে দেখা গেছে, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ঢাকার কমলাপুর ও পানগাঁওতে কনটেনার ওঠানামা বেশ কিছুটা বেড়েছে।
তবে এই তিন মাসে বন্দরে সার্বিক পণ্য ওঠানামা কমেছে। গত আগস্ট থেকে অক্টোবরে বন্দরে মোট দুই দশমিক ৯১ কোটি টন পণ্য ওঠানামা হয়েছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তা পাঁচ দশমিক ১৮ শতাংশ কম। এই সংখ্যা কনটেনারবাহী ও খোলা উভয় ধরনের পণ্য হিসাব করে করা। গত বছর ওই তিন মাসে সার্বিক পণ্য পরিবহন হয়েছিল তিন দশমিক শূন্য সাত কোটি টন।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্সি এসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ জানান, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে খোলা পণ্যের আমদানি কিছুটা কমেছিল। তার মতে, অপেক্ষাকৃত ছোট আমদানিকারকরা ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকে এলসি খুলতে সমস্যায় পড়ায় আমদানি কম হয়েছে। এ ছাড়াও বড় বড় আমদানিকারকরাও আমদানির পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছিলেন। যে কারণে তারা এক সঙ্গে বেশি পণ্য বড় জাহাজে আনার চাইতে অপেক্ষাকৃত ছোট জাহাজে পণ্য এনেছেন। এতে করে বাল্ক জাহাজ আসার সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এই তিন মাসে বন্দরে জাহাজ আসার তথ্য যাচাই করলে তার কথার সত্যতা পাওয়া যায়। এই তিন মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় জাহাজ আসার সংখ্যা কমেছে। গত বছর ওই সময় জাহাজ এসেছিল এক হাজার ২৩টি। এ বছর জাহাজ এসেছে ৯৬৬টি। মোট জাহাজ আসার সংখ্যা কমলেও মূলত কনটেনার জাহাজ তুলনামূলক কম এসেছে। বাল্ক জাহাজ এসেছে বেশি।

×