.
প্রকৃতিতে এখন শীতের আমেজ। ইতোমধ্যে মৌসুমি সবজিও বাজারে মিলছে। কিন্তু শীতের সবজির কোনো প্রভাব নেই বাজারে। উল্টো নতুন সবজি কিনতে গিয়ে অতিরিক্ত পয়সা গুনতে হয়। কিছু সবজির দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। আবার কোনটির কমেছে। কিন্তু আলুর দাম চড়া দাম এখন অব্যাহত রয়েছে। নতুন আলু তো ক্রেতার ধরাছোঁয়ার বাইরে। পেঁয়াজের দাম কেজিতে কিছুটা কমেছে। বাজারে পাতাসহ পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার কারণে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমেছে। অন্যান্য পণ্যের দর মোটামুটি একই রকম রয়েছে।
শুক্রবার সরেজমিনে মোহাম্মদপুর টাউন হল ও শান্তিনগর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে কোনো কোনো সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে অস্থির আলুর বাজারে। দুই সপ্তাহ আগেও যে আলু বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, এখন তো ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর নতুন আলু যে যার কাছে যে দামে বিক্রি করা যায়, সেই দামেই বিক্রি করছেন তারা। নতুন দেশী ছোট ও বড় সব আলুই বাজারে উঠেছে। এ ছাড়া বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখীর কেজি ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুরলতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং কাঁচমরিচ ১০০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে শীতকালীন সবজি শিমের কেজি ১২০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৩০ থেকে ৬০ টাকা, ছোট আকারের বাঁধাকপি ৫০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা। লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনেপাতার কেজি ৫০ টাকা কমে ১৫০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৫০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতিটি ৬০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ২০ টাকা, কলমি শাক ১৫ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। সব ধরনের পেঁয়াজ কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। দেশী পেঁয়াজ ২০ টাকা কমে ১৪০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৯০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচা আদা ১২০ টাকা এবং পুরনো আদা ২৮০ টাকা, রসুন ২৪০ টাকা, নতুন আলু ১৪০ টাকা, বগুড়ার আলু ১০০ টাকা ও পুরনো আলু ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি কক ৩০০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ২৮০ টাকা, দেশী মুরগি ৫২০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ২৯০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ২৩০ টাকা, দেশী মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকা।
বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংসের কেজি এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ দেড় হাজার টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাষের শিংয়ের কেজি (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুইয়ের দাম কেজিতে বেড়ে (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশী মাগুর ৮০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা, মৃগেল ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পোয়া মাছের কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা এক হাজার ৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, দেশী কই এক হাজার ২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা ও কাইক্ক্যা ৬০০ টাকা।
পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৮১৮ টাকা, দেশী মসুর ডাল প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭৬ থেকে ৮০ টাকা ও নাজিরশাইল ৭৫ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ক্রেতা সোলায়মান হোসেন বলেন, শীতের সবজি আরও কম দামে কেনার প্রত্যাশা করছি। দর কষাকষির পর সবজি কিনেছি। আশা করছি শীত আসলে দাম আরেকটু কমে যাবে, তখন আমরা একটু স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে পারব। তিনি আরও বলেন, শীতের সবজির চাহিদাই আলাদা। আমিষের চাহিদা এবার শীতের সবজি দিয়ে মেটানোর চেষ্টা করব। সবজির দাম কমলে নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য সুবিধা হবে।
মসলার বাজারেও চড়া দামের কারণে সিন্ডিকেটের কারসাজি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। এলাচ, জিরা, আর গোলমরিচের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। তবে ক্রেতাদের দাবি, অনেক আগেই আমদানিকৃত মসলা বাজারে এসেছে। ডলারের দামের অজুহাতে বেড়েছে পাইকারি বাজারের দাম, যা শীঘ্রই খুচরা বাজারেও প্রভাব ফেলবে।