ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘ভারতের সোনার দাম সংযুক্ত আরব আমিরাতের চেয়ে কম’ এই কথা ওঠার পর আমিরাতের সোনা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, কোনোভাবেই না। এই দাবির সপক্ষে তাঁদের অবস্থান বেশ জোরালো।
সম্প্রতি ভারতে সোনা আমদানির শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু আরব আমিরাতের কাঞ্জ জুয়েলার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিল ধানাক বলেছেন, এতে দুবাই ও ভারতের বাজারে সোনার দামের ব্যবধান সামান্য কমেছে। খবর গালফ নিউজ
এই পার্থক্য সত্ত্বেও আরব আমিরাতে সোনার দাম এখনো ভারতের চেয়ে কম। ফলে আমিরাতে সোনা কিনলে ভোক্তাদের এখনো সাশ্রয় হচ্ছে। এ ছাড়া দুবাইয়ের বাজারে সোনা কিনলে পর্যটকেরা কর অব্যাহতির সুবিধা পান। সে কারণে দুবাইয়ের বাজার থেকে সোনা কেনা আরও বেশি লাভজনক।
আরব আমিরাতের বাজার থেকে সোনা কেনা ভারতীয় পর্যটকদের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই লাভজনক। একসময় ভারত নিজ দেশে সোনার চাহিদা কমানোর জন্য আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশে উন্নীত করে, সে জন্য আরব আমিরাতের বাজার ভারতীয় পর্যটকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বিশ্বের বৃহত্তম সোনা আমদানিকারক হচ্ছে চীন, এরপরেই ভারতের অবস্থান। ভারত মূলত আমদানির ওপর নির্ভরশীল। দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তির কারণে ভারত বুলিয়ন সোনার বড় অংশ আরব আমিরাত থেকে আমদানি করে।
সম্প্রতি ভারতের গণমাধ্যমে এই দাবি করা হয় যে বর্তমানে আরব আমিরাতের চেয়ে ভারতের বাজার থেকে সোনা কেনা বেশি লাভজনক। শুধু আরব আমিরাত নয়, একই সঙ্গে কাতার ও ওমানের মতো দেশের তুলনায় ভারত থেকে সোনা কেনা সাশ্রয়ী।
এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর প্রবাসী ভারতীয় ও পর্যটকেরা আরব আমিরাতের সোনার দোকানে বিষয়টি খোঁজখবর নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আমিরাতের এক গয়নার দোকানের স্বত্বাধিকারী। তিনি আরও বলেন, ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এই খবর একেবারে ভুল। এ বিষয়ে আমিরাতের সোনা ব্যবসায়ীদের কিছু করা উচিত বলেও তিনি মত দেন।
আরও খারাপ বিষয় হলো সেই ব্যবসায়ী বলেন, ওই প্রতিবেদনে সত্যতার কোনো উপাদান ছিল না।
ওই প্রতিবেদনের বক্তব্যের মূল যুক্তি ছিল, ভারতের রুপির বিপরীতে ডলার শক্তিশালী হওয়ায় ভারতের বাজারে সোনার দাম কমবে আরব আমিরাত ও কাতারের তুলনায়। বর্তমানে আরব আমিরাতের এক দিরহামের বিনিময়ে পাওয়া যাচ্ছে ২২ দশমিক ৯৮ ভারতীয় রুপি, যেখানে এক ডলারের বিনিময়ে পাওয়া যাচ্ছে ৩ দশমিক ৬৭ দিরহাম। সে কারণে ডলার শক্তিশালী হলে ভারতের বাজারে সোনার দাম কমবে।
এমন একসময় ভারতের সংবাদমাধ্যমে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন বছর শেষের সময় ঘনিয়ে আসছে। ভারতের পর্যটকেরা এই সময় আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বেড়াতে যাবেন এবং তাঁদের এই ভ্রমণের মূল আকর্ষণ হচ্ছে সোনা কেনা।
শিহাব