ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদেরকে বঞ্চিত করে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ব্যবসায় মুনাফার ৩১ শতাংশেরও কম লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আর মুনাফা ছাড়াই বোনাস শেয়ার ঘোষণার মাধ্যমে রসিকতা করেছে বেক্সিমকো লিমিটেডের পর্ষদ।
শেয়ারবাজারে সমালোচিত একটি গ্রুপ বেক্সিমকো। যাদের নেতৃত্বে থাকা সালমান এফ রহমানের উদ্দেশ্যই শেয়ারবাজার থেকে টাকা নেওয়া এবং বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা। যার আরেক দফায় প্রমাণ রাখল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ব্যবসায় লভ্যাংশকে কেন্দ্র করে।
অন্যসব বছরের ন্যায় এবারও মুনাফার বড় অংশ কোম্পানিতে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেক্সিমকো ফার্মার পরিচালনা পর্ষদ। আর বেক্সিমকো লিমিটেডের পর্ষদ মুনাফা ছাড়াই বোনাস শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ ব্যবসা সম্প্রসারনের জন্য মুনাফা রেখে দেওয়ার লক্ষ্যে বোনাস শেয়ার দেওয়া যায়।
বেক্সিমকো ফার্মা : এ কোম্পানিটির ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি ১৩.০৭ টাকা হিসেবে ৫৮৩ কোটি ৭ লাখ টাকার নিট মুনাফা হয়েছে। এরমধ্যে থেকে ৪০% নগদ লভ্যাংশ হিসেবেলি শেয়ারপ্রতি ৪ টাকা করে মোট ১৭৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বা মুনাফার ৩০.৬০% শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরন করা হবে। মুনাফার বাকি ৪০৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বা ৬৯.৪০% কোম্পানিতে রেখে দেওয়া হবে।
এর আগের অর্থবছর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ১০.৩৪ টাকা বা নিট ৪৬১ কোটি ৪১ লাখ টাকা মুনাফারা বিপরীতে শেয়ারহোল্ডারদের ৩৫ শতাংশ হারে বা শেয়ারপ্রতি ৩.৫০ টাকা করে মোট ১৫৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়। যা ছিল মুনাফার ৩৩.৮৪ শতাংশ।
এদিকে কোম্পানিটির আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬% মুনাফা বেড়েছে। এ কোম্পানিটির আগের অর্থবছরের ১০.৩৪ টাকার শেয়ারপ্রতি মুনাফা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে হয়েছে ১৩.০৭ টাকা।
বেক্সিমকো লিমিটেড : শেয়ারবাজার থেকে সুকুক বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করে বেক্সিমকো। যা নেওয়ার আগে কোম্পানিটির মুনাফায় চমক দেখা যায়। তবে টাকা সংগ্রহের পরে মুনাফা কমতে কমতে লোকসানে চলে এসেছে।
কোম্পানিটির ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ০.৪১ টাকা। এতে করে কোম্পানিটির নিট লোকসান হয়েছে ৩৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এরপরেও কোম্পানিটির পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৫ শতাংশ হারে ৪৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার বোনাস শেয়ার শেয়ার ঘোষণা করেছে। এতে করে কোম্পানিটির সমপরিমাণ পরিশোধিত মূলধন বাড়বে এবং শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার সংখ্যা বাড়বে।
অথচ বোনাস শেয়ার ইস্যু করা হয় অর্জিত মুনাফা রেখে ব্যবসা সম্প্রসারনের জন্য। যেখানে কোম্পানির মুনাফাই হয়নি, সেখানে বোনাস শেয়ার ইস্যুকে রসিকতা ছাড়া অন্য কিছু মানতে নারাজ বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, কোন কোম্পানির যদি ব্যবসা সম্প্রসারনে সুযোগ থাকে, সেক্ষেত্রে অর্জিত মুনাফা রেখে দিতে পারে। সেটা নগদ লভ্যাংশ না দিয়ে এবং বোনাস শেয়ার দিয়ে। কিন্তু মুনাফাই যদি না হয়, তাহলে বোনাস শেয়ার কেনো ইস্যু করা হবে? এটারতো কোন যুক্তিকতা নেই।
জাফরান