ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

ব্যাংক খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২৬, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

ব্যাংক খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, বর্তমানে ৪৬টি ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। যার মধ্যে এক সময় তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে এখন উদ্বৃত্ত দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরে আমানতকারীদের আস্থা বৃদ্ধির কারণেই এই পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন করে আস্থা ফিরে আসা সত্ত্বেও ২০২৪ সালের আগস্টে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি বছরে ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশে নেমে এসেছে। আর এটিই ব্যাংকগুলোয় তারল্য বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, বর্তমানে ৪৬টি ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। যার মধ্যে চারটি শরিয়াহভিত্তিক এবং ৪২টি প্রথাগত ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে উদ্বৃত্ত তহবিলের শীর্ষে রয়েছে সোনালী ব্যাংক। এরপর রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল)।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, আমানতকারীরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। কারণ তারা মনে করেন তাদের কষ্টার্জিত অর্থের জন্য বেশি নিরাপত্তা দেওয়া হয় এসব প্রতিষ্ঠানে। এই পরিবর্তনের ফলে সরকারি ব্যাংকগুলোতে আমানত বেড়েছে। বিপরীতে শরিয়াভিত্তিক কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা কম অনুকূলে রয়েছে।

এস আলম গ্রুপের মতো বড় শিল্পগোষ্ঠী একাধিক ব্যাংক অধিগ্রহণের পর কয়েকটি আমানতকারী এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তাদের তহবিল তুলে নিয়েছিলেন। এস আলম, বেক্সিমকো ও সিকদার গ্রুপের মতো গ্রুপের বিরুদ্ধে বড় আকারের ঋণ খেলাপির কারণে শরিয়াহভিত্তিক ও প্রচলিত কিছু ব্যাংক তারল্য সংকটে পড়েছে। 
বেসরকারি ঋণে নীতিগত প্রভাব ॥ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি কমার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিকে দায়ী করা যেতে পারে, যার লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। উচ্চ সুদের হার এবং স্থানীয় মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠানামাও উদ্যোক্তাদের নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সন্ধানে নিরৎসাহিত করেছে। এর ফলে অনেক ব্যাংক তাদের অতিরিক্ত তার‌্য সরকারি বন্ড ও বিলে বিনিয়োগ করেছে। 
ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ॥ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের অধিকাংশ ব্যাংকে পর্যাপ্ত তারল্য রয়েছে। বেসরকারি খাতের ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেকেই মানসম্মত ব্যাংকিং পদ্ধতি অনুসরণ করে ট্রেজারি ইনস্ট্রুমেন্টে বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছেন।

×