তিন মাসে ৭৮ হাজার ২২ কোটি টাকার রেমিটেন্স
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৭৮ হাজার ২২ কোটি টাকার রেমিটেন্স আহরিত হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে জুলাই মাসে বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানো এক প্রকার বন্ধ রেখেছিলেন প্রবাসীরা। এতে হঠাৎ কমে যায় রেমিটেন্সের গতিপ্রবাহ। রেমিটেন্স আসা থমকে যায়। তবে তার সরকারের পদত্যাগের পর তা হু হু করে বাড়তে থাকে রেমিটেন্স।
এরই ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রেমিটেন্স এসেছে ৭৮ হাজার ২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জুলাইয়ে প্রবাসী আয়ে বড় ধাক্কা লাগে, এ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ২২ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। পরে আগস্ট থেকে রেমিটেন্সে সুবাতাস বইতে শুরু করে, এ মাসে এসেছে ২৬ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা ও সেপ্টেম্বরে ২৮ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গত তিন মাসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, জুলাই মাসে ১৯০ কোটি ডলার বা ১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছে দেশে। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ২২ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। এর আগের মাস জুনে এসেছিল ২৫৪১ মিলিয়ন বা ২ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় কমেছে ৬৩ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ৭ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা। আগস্ট মাসের পুরো সময়ে দেশে বৈধপথে রেমিটেন্স এসেছে ২২২ কোটি (২ দশমিক ২২ বিলিয়ন) ডলার।
যা তার আগের বছরের (আগস্ট-২০২৩) একই সময়ের চেয়ে ৬২ কোটি ডলার বেশি। গত বছরের আগস্ট মাসে এসেছিল প্রায় ১৬০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স। প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্সে আগস্টের ধারাবাহিকতা রয়েছে সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসেও। সেপ্টেম্বরের পুরো সময়ে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার (২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন) পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে) ২৮ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, রেমিটেন্স পাঠানোয় প্রধান দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রবাসী আয় আসে ১০৩ কোটি ২২ লাখ ১০ হাজার ডলারের। এর মধ্যে জুলাই মাসে এসেছিল ৩৩ কোটি ২৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার। পরের মাস আগস্টে আসে ৩৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং সেপ্টেম্বরে আসে ৩৬ কোটি ১৮ লাখ ডলারের রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়। রেমিটেন্সের দ্বিতীয় দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রবাসী আয় এসেছে ৯২ কোটি ৩ লাখ ৮০ হাজার ডলারে। এর মধ্যে জুলাই মাসে আসে ২৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স।
পরের মাস আগস্টে আসে ২৯ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজারের ডলার এবং সেপ্টেম্বরে আসে ৩৮ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার। একইভাবে সরকারের পতনের পর রেমিটেন্স বেড়ে যায় সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া থেকে। সৌদি আরব থেকে জুলাই মাসে ২৪ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার ডলারের রেমিটেন্স এসে। আগস্ট মাসে আসে ২৬ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারের প্রবাসী আয়।
পরের মাসে সেপ্টেম্বরে আরও বেড়ে আসে ৩৪ কোটি ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ডলারের রেমিটেন্স। অন্যদিকে মালয়েশিয়া থেকে জুলাই মাসে রেমিটেন্স আসে ১৩ কোটি ৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স। পরের মাস আগস্টে এসেছিল ২৫ কোটি ১৯ লাখ ডলারের রেমিটেন্স আসেছ। সেপ্টেম্বর মাসে আসে ২৩ কোটি ৭২ লাখ ডলারের রেমিটেন্স ব প্রবাসী আয়।
