ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

মাছ, মুরগি, ডিমের দাম বাড়ছে সবজির বাজার স্থিতিশীল

​​​​​​​স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:০৮, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাছ, মুরগি, ডিমের দাম বাড়ছে  সবজির বাজার স্থিতিশীল

.

নানা উদ্যোগের পরও স্বস্তি মিলছে না বাজারে। চাল, মাছ, মুরগি ডিমের দাম এখনো বাড়তির দিকে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে সবজির বাজার। ক্ষেত্র বিশেষে কিছু সবজির দামও কমেছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে থেকে টাকা পর্যন্ত। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি অন্তত ১০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিমের দামও হালিপ্রতি বেড়েছে থেকে টাকা।

শুক্রবার মিরপুর, পুরান ঢাকার শ্যামবাজার, কাপ্তানবাজার, রায়সাহেব বাজার সংলগ্ন বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সবজি ছাড়া কমবেশি সবকিছুর দাম বাড়তি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ টাকা। ডিমের হালিতে খুচরা পর্যায়ে বেড়েছে টাকা পর্যন্ত।

ক্রেতারা বলছেন, নতুন সরকার সবজি অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কমাতে যেমন উদ্যোগ নিচ্ছে, তেমনি মাছ মাংস চালের ক্ষেত্রেও সেই উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। পুরান ঢাকার রায় সাহেববাজারে আসা একাধিক ক্রেতা বলেন, সরকার পতনের পর বিভিন্ন পণ্যের দাম কিছুটা কমলেও এখন আবার ধীরে ধীরে মাছ-মুরগি-ডিম সবকিছুর দাম বাড়ছে। এই সরকারের কাছে সাধারণ মানুষের প্রধান যে চাওয়া তার প্রথম কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ।

সবজির বাজারে এসে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতারা। বাজারে পটোল থেকে শুরু করে বেগুন, চিচিঙ্গা, লাউ, কাঁকরোল, করলা, বরবটি, আলুসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির আগের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। বলা চলে এক মাসের ব্যবধানে অনেক সবজির দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৮০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে শীতকালীন সবজি শিম ২০০ টাকা কেজি, ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা,পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং গাজর ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি  শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, আদা ২৮০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা এবং আলু কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একদিনের ব্যবধানে বয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে টাকা। আর সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন সাপ্লাই কম। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ ১৭০ টাকার নিচে ব্রয়লার মুরগি নাই। পাইকারি যদি আমাদের ১৭০-১৭২ টাকা কেনা পড়ে তা হলে ভাড়া খরচ সব মিলিয়ে খুচরা ১৮০ টাকা বিক্রি করতে হবে। নয়তো পোষাবে না। সোনালি মুরগির বিষয়ে ক্রেতারা জানান, দু-তিন আগেও সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৫০-২৭০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা আরও ১০-১৫ টাকা কম ছিল। কিন্তু এখন দাম বেড়ে গেছে। খুচরা পর্যায়ে ডিমের হালিপ্রতি টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাইকারিতে বেড়েছে ডজনপ্রতি টাকা।

ডিম মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণে অনেক মুরগির খামারের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। এতে ওই সব এলাকায় মুরগি ডিমের সরবরাহ কমেছে। তা ছাড়া ভারত থেকে সম্প্রতি যে ডিম আমদানি করা হয়েছে, তা চাহিদার তুলনায় সামান্য। ফলে সরবরাহ কম থাকায় ডিম মুরগির দাম বেড়েছে। মুরগির দাম বাড়লেও কিছুটা কমেছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকায়। সপ্তাহ দুয়েক আগেও গরুর মাংসের কেজি ছিল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। দাম বেশি থাকার কারণে মাংস বিক্রি খুব কম হচ্ছে দেখে অনেক ব্যবসায়ী দাম কিছুটা কমিয়েছেন।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়েছে, তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী কমেনি দাম। এক কেজির কিছুটা বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। কমবেশি ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা। আর ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেনা যাচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়। ছোট ইলিশ বা জাটকার কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। তবে তা বাজারে বেশ অপ্রতুল।

 

×