মাহবুবুল আলম
ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে এফবিসিসিআইয়েতে প্রশাসক নিয়োগ করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সংগঠনটির সদ্য বিদায়ী পরিচালকরা। তবে তাঁরা মনে করেন, পদত্যাগী প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের একঘেয়েমি ও গোঁড়ামির কারণে বলির পাঠা হয়েছেন নির্বাচিত নিরীহ পরিচালরা। কারণ তার কারণেই পুরো বোর্ড ভেঙে দিতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
তাদের অভিযোগ, সদ্য বিদায়ী সাবেক প্রেসিডেন্ট একজন কট্টরপন্থি আওয়ামী লীগ নেতা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী সরকার বিদায় হলেও তিনি স্বপদে থেকে কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় এফবিসিসিআইয়ের সাধারণ সদস্যরা (জিবি) শুরু থেকেই তাঁর পদত্যাগ দাবি করে আসছিল। শুধু তাই নয়, সংগঠনটির নির্বাচিত পরিচালকসহ সাবেক সভাপতিরাও তাকে পদত্যাগের অনুরোধ করেন।
এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তাকে পদত্যাগ করে সরে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি কারও অনুরোধ ও দাবি কর্ণপাত না করায় পরিস্থিতি জটিল হচ্ছিল। এ অবস্থায় তিনি যে চেম্বারের (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি হয়ে এফবিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট হয়ছিলেন সেটির বোর্ডও ভেঙে দেওয়া হয়। ফলে বাণিজ্য সংগঠন আইন অনুযায়ী তিনি আর প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে পারেন না। ইতোমধ্যে তার অবর্তমানে সিনিয়র সভাপতি আমিন হেলালীকে তিনি বোর্ড গঠনের অনুরোধ করেন, যা আইনসম্মত নয়।
এরই মধ্যে তিনি নির্বাচিত বোর্ডকে না জানিয়েই পদত্যাগ করে চলে গেলেন। এ প্রসঙ্গে স্টিল খাতের প্রতিনিধিত্বকারী এফবিসিসিআইয়ের সদ্য বিদায়ী পরিচালক আমির হোসেন নূরানী বলেন, আসলে আমরা নির্বাচিত নিরীহ পরিচালকার প্রেসিডেন্টের বলির পাঠা হয়েছি। আমরা চরম বৈষম্যের শিকার। তিনি আগে থেকে পদত্যাগ করলে পরিস্থিতি এ রকম হয়তো হতো না। তিনি নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
ফলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে নির্বাচিত পরিচালরা স্থান পায়নি। বর্তমান প্রশাসক হাফিজুর রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করছি তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে এফবিসিসিআইতে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আয়োজন করতে সক্ষম হবেন। সকল জিবি মেম্বারদের আশা আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করবেন তিনি। এফবিসিসিআইতে বেশকিছু সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরে তিনি বলেন, সভাপতি, সিনিয়র সভাপতি, সভাপতি ও পরিচালকসহ সকল পদের জন্য সরাসরি ভোট হতে হবে।
পরপর দুই মেয়াদের পর পরিচালক পদে একবারের জন্য বিরতির বিধান চালু এবং মনোনীত পরিচালক প্রথা বাতিল করতে হবে। এসএমই খাত উন্নয়নে অর্থনীতির ছোট ছোট খাতের উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ব্যবসায়ীরা যাতে অর্থনীতির স্বার্থে কাজ করতে পারেন সেই সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।