ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১

অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজ করবে এনবিআর

অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজ করবে এনবিআর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৩, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজ করবে এনবিআর

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)

কর জাল সম্প্রসারণ করা সম্ভব না হলে বিদ্যমান করদাতারা কর প্রদানে নিরুৎসাহিত হবেন, তাই করজাল সম্প্রসারণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগামী ৬ মাস কাজ করবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। বুধবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫ শতাংশ লোক রাজস্ব প্রদান করে, যেখানে ভারতে এ হার ২৩ শতাংশ এবং বিদ্যমান বাস্তবতায় রাজস্ব আহরণের হার বাড়াতে নিজেদের করজাল সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই বলে তিনি অভিমতজ্ঞাপন করেন।
তিনি বলেন, আমাদের মোট রাজস্বের সিংহভাগই আসে বিদ্যমান করদাতাদের কাছ থেকে এবং সমাজের একটি বড় অংশই করজালের বাইরে থেকে যাচ্ছে, ফলে চাপ বাড়ছে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর। এমতাবস্থায় কর জাল সম্প্রসারণ করা সম্ভব না হলে বিদ্যমান করদাতারা কর প্রদানে নিরুৎসাহিত হবেন, তাই করজাল সম্প্রসারণে এনবিআর অগ্রাধিকারভিত্তিতে আগামী ৬ মাস কাজ করবে।
আবদুর রহমান আরও বলেন, বিভিন্ন স্তরে কর আহরণের কারণে বিশেষকরে কর্পোরেট করের ইফেক্টিভ হার বেড়ে যায়, বিষয়টি এনবিআর গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। সামগ্রিক রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা না কমিয়ে, কর হার যৌক্তিকীকরণের পাশাপাশি দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজানো হবে।
ব্যবসায়িক লেনদেন প্রক্রিয়া ক্যাশলেস ও ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সম্পন্ন করার জন্য ব্যবসায়ী সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে কর আহরণের হার আরও বৃদ্ধি পাবে। রাজস্ব খাতের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি সমাধানের লক্ষ্যে ডিসিসিআইকে প্রয়োজনীয় গবেষণা পরিচালনা করে সুপারিশ করলে এনবিআর যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, দেশের জটিল রাজস্ব কাঠামোর জন্য আমাদের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তাবৃন্দ ব্যবসা পরিচালনায় নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, তাই এখাতের উদ্যোক্তাদের বিকাশে সহায়ক এবং সহজ রাজস্ব কাঠামো প্রণয়নের ওপর জোরারোপ করেন। বিদ্যমান কর হার না বাড়িয়ে, করজাল সম্প্রসারণের ওপর তিনি জোরারোপ করেন।
তিনি জানান, বর্তমান আইনে ব্যবসায়িক ক্ষতিকে অন্যান্য ব্যবসায়িক উৎসের আয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতে না পারলে ব্যবসায়ীদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা আরোপিত হচ্ছে, এ লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা ৩৭-এর অনুরূপ বিধান পুনঃবহালের প্রস্তাব করেন। কর প্রদান ও করসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি সহজীকরণের লক্ষ্যে আয়কর ব্যবস্থাকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসার ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন, পণ্যের বিবরণ সঠিক থাকলেও এইচএস কোডে ভুল থাকার কারণে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে, যার ফলে ব্যবসায়ীদের অনেক সময় হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়, এমতাবস্থায় পণ্যের বিবরণ এবং এইচএস কোডের যে কোনো একটি সঠিক থাকলে কাস্টমস আইন ২০২৩-এর ৮৬(১) ধারা সংশোধন করে অ্যাসেসমেন্ট পর্যায়ে দাখিলকৃত পণ্য ঘোষণার সংশোধন ও প্রত্যাহারের সুযোগ প্রদানের আহ্বান জানান।

এ সময় ঢাকা চেম্বার ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, এনবিআর সদস্য (শুল্ক) মো. মাসুদ সাদেক, সদস্য (করনীতি) এ কে এম বদিউল আলম, সদস্য (কর প্রশাসন) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ উপস্থিত ছিলেন।

×