ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের বৈঠক

যুক্তরাষ্ট্রকে কৃষি এনার্জি ও জলবায়ু খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২৫ আগস্ট ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রকে কৃষি এনার্জি ও জলবায়ু খাতে বিনিয়োগের আহ্বান

উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে সরকার। বিশেষ করে দেশের কৃষি এনার্জি ও জলবায়ুসহ অন্যান্য খাতে যুক্তরাষ্ট্রকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে চলমান সমস্যাগুলো দ্রুত নিরসনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সমস্যাগুলো নিরসনে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসবেন।
রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশী সাংবাদিকদের অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিকভাবে তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ইউএসএ’র অনেক বড় বিনিয়োগ রয়েছে। ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা জিএসপিসহ আরও কিছু সমস্যা আছে।

ইউএস কোম্পানিগুলোও কিছু অভিযোগ ছিল, যে তারা তাদের টাকা নিতে পারছে না। আবার আমাদের অনেক কোম্পানির নিষেধাজ্ঞা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। তবে এখনো এত গভীরে আলোচনায় যায়নি। তারা বলেছে আমাদের যেসব বিষয় পেন্ডিং আছে সেগুলোর কিছু কিছু ইস্যু নিয়ে তাদের আপত্তি আছে। এ ছাড়া কারখানায় নিরাপদ কর্মসূচি বাস্তবায়নে শ্রমআইন বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে।  
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অন্যান্য পেন্ডিং ইস্যুগুলো দ্রুত সমাধান করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তারা। সামনে বিশ্বব্যাংকের মিটিং রয়েছে, সেখানে এসব বিষয় নিয়ে আবার আলোচনা করব। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হাই লেভেল ভিজিটর বাংলাদেশে আসবে। তারা আমাদের সঙ্গে আরও অন্যান্য বিষয়ে কথা বলবে।  জিএসপি নিয়ে কি আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জিএসপির সব শর্ত আমরা পালন করতে পারছি না।

আমি এখন বক্তব্য দিয়ে দিলাম দেখা গেল হলো না। তবে এসব কিছু এত কঠিন না আমাদের জন্য। এটাও হবে। তিনি বলেন, পোশাকখাতের উদ্যোক্তা ও সংগঠনগুলো বিশেষ করে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ’র পক্ষ থেকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। জিএসপি পাওয়ার বিষয়ে যেসব শর্ত ও পরিপালনের কথা বলা হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে আরও দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে গার্মেন্টস মালিকদের।

রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে জিএসপি উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল, সেরকম কিছু বিষয় কি না এমন প্রশ্নের জাবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ইউএসএ’র যে শর্ত সেটা রাজনীতির না। তাদের অনেকগুলো ডিপার্টমেন্ট আছে তারা যদি অনুমোদন না দেয় তাহলে কংগ্রেসম্যান কিছু করতে পারে না।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য অংশীদার। দেশটি আমাদের অধিকাংশ খাতে সহায়তা করে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তাদের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। বিশেষ করে বাগেরহাট, পিরোজপুরসহ উপকূলীয় অঞ্চলের বিনিয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া কৃষিখাতসহ বিভিন্ন জায়গায় সহায়তা করছে।

মূলকথা হচ্ছে, কৃষি, এনার্জি, জলবায়ু খাতসহ অন্যান্য খাতে আরও বেশি বিনিয়োগ করার কথা বলেছি আমি তাদের। অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বন্যা মোকাবিলা ও জলবায়ুজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চায় বাংলাদেশ। এ ছাড়া এফডিআই, আমাদের রপ্তানি, বিনিয়োগ বা সরাসরি বিনিয়োগ এবং যৌথ বিনিয়োগ যদি করতে চায় তাহলে করবে। বেসিসসহ যেসব  টেকনিক্যাল খাত রয়েছে সেখানে কি করা যায় সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে- এতদিন নেগোসিয়েশন একটু ‘স্লো’ ছিল। আমরা তাদের বলেছি, আমরা বিরাট একটা ঋণে আছি। তবে ইউএসএর সঙ্গে আমাদের ঋণ নেই। তারা যেসব সাহায্য করেছে সবগুলো কিন্তু ঋণ নয়, গ্র্যান্ড। সেদিক থেকে তাদের ঋণে আমরা ভারাক্রান্ত না। সেজন্য তাদের বলেছি, আমাদের সাহায্য করতে। দেশটি দ্রুত সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে।

×