ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

পেঁয়াজ মুরগি ডিমের দাম কমলেও বেড়েছে চালের

​​​​​​​অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:২০, ২৩ আগস্ট ২০২৪

পেঁয়াজ মুরগি ডিমের  দাম কমলেও  বেড়েছে চালের

.

নিত্যপণ্যের বাজারে পেঁয়াজ, মুরগি ডিমের দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে চালের। ভোজ্যতেল, চিনি, আটা, ডাল মাছ-মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ছাড়া আগামী দিনের মধ্যে প্রতি কেজি  ভোজ্যতেলের দাম ১২০ টাকা, চিনির দাম ৯০ টাকা আলুর দাম ২৫ টাকায় নামিয়ে আনার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সঙ্গে দুর্নীতি, দখলদারিত্ব, সিন্ডিকেট স্বৈরাচারী রোধে একটি ট্রুথ কমিশন গঠনেরও দাবি জানিয়েছে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মটি।

এদিকে, অতিবৃষ্টি বন্যার কারণে বাড়তে শুরু করেছে সবজির দাম। ফের মরিচের দাম বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি মরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, কাপ্তান বাজার, খিলগাঁও রেলগেট বাজার মালিবাগ রেলগেট বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বিশ্বের কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। দাম কমে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০-১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ খানেক আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১০০ টাকার ওপর গুনতে হয়েছে ক্রেতাদের। ছাড়া সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির তথ্যমতে, দাম বেড়ে প্রতি কেজি সরু চাল ৬৪-৮০, মাঝারি মানের পাইজাম লতা ৫৫-৬০ এবং স্বর্ণা চায়না ইরিখ্যাত মোটা চাল ৫২-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।

সংস্থাটির তথ্যমতে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭৫, প্রতি হালি ডিম ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছাড়া অতি বৃষ্টি বন্যার কারণে কিছুটা বেড়েছে সবজির দাম। দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজিখেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে করে কমেছে সবজির উৎপাদন। বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০  থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছাড়া বাজারে প্রচুর ইলিশ মাছের সরবরাহ থাকলেও দাম কমেনি। তবে অন্যান্য মাছ আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।

তেল-চিনি-আলুর দাম কমাতে দিনের আল্টিমেটাম আগামী দিনের মধ্যে প্রতি কেজি ভোজ্যতেলের দাম ১২০ টাকা, চিনির দাম ৯০ টাকা আলুর দাম ২৫ টাকায় নামিয়ে আনার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সম্প্রতি ভোজ্যতেল, চিনি অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, শিল্প, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারি বেসরকারি সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায় আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. বিন ইয়ামিন মোল্লার নেতৃত্বে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আজকে আমরা একটা কথা জানাতে চাই, আগামী দিনের মধ্যে প্রতি কেজি ভোজ্যতেলের দাম ১২০ টাকা, চিনি ৯০ টাকা, আলুর দাম প্রতি কেজি ২৫ টাকায় নামিয়ে আনতে হবে। সেক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি যত প্রতিষ্ঠান আছে তাদেরসহ বেসরকারি যত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে তাদেরও এই আল্টিমেটাম দিচ্ছি। আপনারা এক সপ্তাহের মধ্যে কীভাবে এই দাম নির্ধারণ করবেন, সেটা আপনাদের দায়িত্ব। ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে দামের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের প্রতিষ্ঠান থেকে যারা দুর্নীতি করেছে এবং চরমভাবে যারা স্বৈরাচারী সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করেছে তাদের আইনিভাবে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাই। একই সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি একটি ট্রুথ কমিশন গঠন করার জন্য।

যার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ ন্যায্যতা পায়।ব্যবসায়ী বিভিন্ন সংগঠনকে উদ্দেশ্য করে ইয়ামিন মোল্লা বলেন, এত দিন বাংলাদেশে যেভাবে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিগত সরকারের রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্রব্যমূল্যকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, মানুষকে শোষণ করা হয়েছে। আমরা সেই সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান জানাব আপনারা জনবান্ধব জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠন করার যে মূল্যবোধ, সেটিকে ধারণ করে ব্যবসা করবেন। অতি মুনাফা পরিহার করবেন। দেশের মানুষ যেন চারটা ডাল, ভাত ডিম খেতে পারে সে ব্যবস্থা করবেন। কারণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। আপনারা মানবিক হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করবেন বলে আমরা আশা করছি।

 

×