ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১

সরকারি চাকুরেরা বিনিয়োগ করতে পারবেন এমন আশা

শেয়ারবাজারে বড় উত্থান দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০২, ৫ জুলাই ২০২৪

শেয়ারবাজারে বড় উত্থান দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

শেয়ারবাজারে বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শেয়ারবাজারে ব্যবসা করতে পারবেন। সরকারি চাকরিজীবীদের বিনিয়োগের সুযোগ রেখে পরিপত্র জারি হচ্ছে এমন আশাতে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে। শুধু তাই নয়, গত দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে। একইদিনে দাম বেড়েছে ৩৬৫টি প্রতিষ্ঠানের।
গত বেশ কিছুদিন ধরে তারল্য সংকট, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার কারণে ডুবতে বসেছিল শেয়ারবাজার। সেখান থেকে একদিনে ১২৩ পয়েন্টের উত্থান রীতিমতো আশা জাগানোর মতোই। ফলে লোকসানে থাকা শেয়ারধারী বিনিয়োগকারীরা নতুন করে প্রাণ ফিরে পাচ্ছেন।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ১২৩ পয়েন্ট। আর লেনদেন বেড়ে ৮০০ কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। এতে গত ১৩ মে’র পর বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। 
ডিএসইর মতো অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। ফলে বাজারটিতে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়ছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দিলে নতুন তারল্য প্রবেশ করবে। বৈধভাবে অনেক নতুন ফান্ড শেয়ারবাজারে আসবে। এই আশাতেই বৃহস্পতিবারে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা ফিরেছে।
শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখীর দেখা মেলে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দাম বাড়ার তালিকা। ফলে সবকটি সূচকের বড় উত্থান দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩৬৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের। আর ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে।
দিনের লেনদেনের বেশিরভাগ সময় এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে বিপুল পরিমাণ ক্রয় আদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রয় আদেশ ঘর। ফলে দিনের সর্বোচ্চ দামেই এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১২৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪৯৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগেরদিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগেরদিনের তুলনায় ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৭০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৩৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২৩১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায় বাড়েনি, চলতি বছরের ১৩ মে’র পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের ১৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৭ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

×