ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৪ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১

প্রথমবারের মতো ৬ মাসে মুনাফা ছাড়িয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা

অর্ধবার্ষিকীতে রূপালী ব্যাংকের সর্বোচ্চ মুনাফার রেকর্ড

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ১ জুলাই ২০২৪

অর্ধবার্ষিকীতে রূপালী ব্যাংকের সর্বোচ্চ মুনাফার রেকর্ড

রূপালী ব্যাংকের সর্বোচ্চ মুনাফার রেকর্ড

চলতি বছরের অর্ধবার্ষিক (জানুয়ারি- জুন, ২০২৪)  হিসাব সমাপনীতে মুনাফায় অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক পিএলসি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এবারই প্রথম অর্ধবার্ষিকীতে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেছে ব্যাংকটি। ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রথম ছয় মাসের হিসাব সমাপনীতে পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকারও বেশি।

গত বছর একই সময়ে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ৩২০ কোটি টাকা ২০২২ সালে যা ছিল মাত্র ৬৮ কোটি টাকা। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকটির আমানত বেড়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি এবং ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকটি প্রথমবারের মতো অবলোপিত ঋণ হিসাব থেকে আদায় করেছে ৪৫ কোটি টাকা । 
ব্যাংকিং খাতে যখন আমানতের সংকট চলছে তখন কিভাবে এত আমানত বাড়ল এ বিষয়ে ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এটি একটি সরকারি ব্যাংক তাই এর প্রতি গ্রাহকদের যে আস্থা তা সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থারই প্রতিফলন। এই বিপুল পরিমাণ আমানত সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে ব্যাংকটি সব আর্থিক সূচকে ভালো করবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।  
২০২২ সালের ২৮ আগস্টে ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি প্রযুক্তি নির্ভর সেবার পরিধি আরও বৃদ্ধিসহ ব্যাংকের সার্বিক ব্যবসা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে খেলাপী ঋণ হ্রাস, ঋণ ও আমানত বৃদ্ধি, আমানত-ঋণ অনুপাত বৃদ্ধি, লোকসানি শাখা কমিয়ে আনা, বিভিন্ন নতুন ঋণ ও আমানত স্কিম চালু, ব্যাংকের সার্বিক সূচকগুলোর মান উল্লেখযোগ্য উন্নতি লাভ করেছে। এ ছাড়া গ্রাহকের দোরগোড়ায় ব্যাংকিংসেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রযুক্তি নির্ভর সেবা চালু ও পরিধি বৃদ্ধি করেছেন। 
মূলত সুদ ও ট্রেজারি থেকে আয়  এবং  খেলাপী ও অবলোপিত ঋণের আদায় বাড়ায় ব্যাংকটি অর্ধবার্ষিকীতে এই মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। সিএমএসএমই ঋণ বৃদ্ধি, রপ্তানি বাণিজ্যে জোর দেয়া, রেমিটেন্স আহরণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করায় ব্যাংকের এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া ব্যাংকটি আদায়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। ব্যাংকটির কর্মকর্তারা মনে করছেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্তৃক ঘোষিত বিশেষ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ফলে এ সাফল্য এসেছে।

পূজিবাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাষ্ট্র মালিকানাধীন অন্য ব্যাংকগুলোও দ্রুত তালিকাভুক্ত করা উচিত। এতে করে তারাও জবাবদিহিতার আওতায় আসবে এবং রূপালী ব্যাংকের মতো ভালো করার তাগিদ অনুভব করবে। শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকটি ২০২৩ সালে বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করেছে। 

২০২২ সালে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস)  যেখানে ছিল ৬৮ পয়সা সেখানে ২০২৩ সালে তা ১ টাকা ৩৫ পয়সায় উন্নীত হয়। সে হিসেবে এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৪ সালেও ব্যাংকের বিভিন্ন আর্থিক সূচকে লক্ষণীয় অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সরকার তার মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্যদে অভিজ্ঞ সদস্য মনোনয়ন এবং দক্ষ এমডি নিয়োগ করলে যে কোনো প্রতিষ্ঠান রূপালী ব্যাংকের ন্যায় সামনে এগিয়ে যাবে।

×