ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১

নানা অজুহাতে বাড়নো হলো চালের দাম

অনলাইন রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১২:০৮, ২৮ জুন ২০২৪

নানা অজুহাতে বাড়নো হলো চালের দাম

চাল

পাইকারি ও খুচরা বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ধানের দাম বেশি ও ঈদুল আজহায় মিল বন্ধ- এ দুই অজুহাতে চালের দাম বস্তায় ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজার স্থিতিশীল রাখতে মিলমালিকদের ওপর নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ তাদের।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে দাম বেড়ে যাওয়ার তথ্য মিলেছে। জানা গেছে, খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি দেশি বাসমতি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭৮ টাকা, মাঝারি মানের বিআর ২৮ ও ২৯ চাল ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা ৫৪ টাকা এবং মোটা হাইব্রিড ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদুল আজহার আগে এসব চালের দাম কেজিতে মানভেদে এক থেকে দুই টাকা পর্যন্ত কম ছিল।

পাইকারি বাজারে বর্তমানে চিকন চালের মধ্যে প্রতি কেজি মিনিকেট মানভেদে ৫৯ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৭৪ টাকায়। আর দেশি বাসমতি চালের কেজি ৮০ থেকে ৮৪ টাকা।

মাঝারি মানের প্রতি কেজি বিআর ২৮ চাল ৫১ থেকে ৫৩ টাকা, বিআর ২৯ চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, পাইজাম ৫৪ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের মধ্যে প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণা মানভেদে ৪৯ থেকে ৫১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রিড মোটা চালের কেজিতে ৪৬ টাকা। ঈদের আগে এসব চালের কেজি এক থেকে দুই টাকা কম ছিল।
 
বাবুবাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতারা জানান, চালের বাজার গত এক দেড় মাস ধরে স্থিতিশীল ছিল। কারণ এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে সরবরাহও ভালো ছিল। ঈদের পর হঠাৎ চালের দাম বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছেন কিছু মিলমালিক। এতে বাজারে চালের সরবরাহ কিছুটা স্থবির।  

তিনি বলেন, বস্তায় ধানের জাতের নাম, দাম লেখা সবাই চালু করেনি। দুই-একটি কোম্পানি চালু করেছে। যারা বাকি, তারা সময় চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে। আসলে ধানের জাত লেখা থাকলে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু মিলগেটের দাম লেখা থাকলে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়।  

এ পাইকারি বিক্রেতা সমস্যার উদাহরণ টেনে বলেন, ধরুন আজ আমি যদি ৫০ কেজির চালের বস্তা তিন হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনে আনি, গাড়িভাড়া, লেবার খরচসহ অন্যান্য খরচ যুক্ত করে তিন হাজার ৫২০ টাকা বিক্রি করছি। আগামীকাল যদি বস্তায় ৫০ টাকা বা ১০০ টাকা কমে যায়, তাহলে আমার চাল আর আগের দামে বিক্রি হবে না। আর যদি বেড়ে যায়, তাহলে আমি নির্দিষ্ট দামের চেয়ে বেশিতে বিক্রি করতে পারব না।  
 

বাবুবাজার চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, গত এক-দেড় মাস ধরে চালের দাম স্থিতিশীল ছিল। ঈদের পর সব কিছু বন্ধ ছিল। এ জন্য হয়তো এক টাকা এদিক-সেদিক হয়েছে। তবে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকারের নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। কেউ যাতে কারসাজি করে অতিরিক্ত মজুত না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।  

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সারা দেশে ৫০ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। এবার বোরোতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ কোটি ২২ লাখ টন।

শহিদ

×