প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ‘পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত’ সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি
স্মার্ট বাংলাদেশের বিনির্মাণে প্রায়াজন স্মার্ট এনার্জি ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির পরিমাণ আরও বাড়তে হবে। তাহলে জ্বালানি আরো সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হবে।
রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে সম্প্রতি শক্তি ফাউন্ডেশন এবং সোলশেয়ার আয়োজিত “স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট এনার্জি” বিষয়ক এক নীতি নির্ধারনী সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) অর্থায়নে পরিচালিত সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহারকারী থেকে পেয়ার শেয়ারিং এবং বৈদ্যুতিক থ্রি-হুইলার চার্জিং পিট স্টপ পয়েন্টন্টগুলি জাতীয় গ্রিডের সাথে স্মার্টভাবে সংযুক্তকরণ করে অব্যবহৃত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে এক্সপোর্টিংয়ের মাধ্যমে ইনকাম জেনারেটিং নীতি বিষয়ে সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ‘পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত’ সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি; বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়েশা খান, এমপি।
অনুষ্ঠানে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এই উদ্ভাবনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো উভমুখী সংযোগের মাধ্যমে অতিরিক্ত সৌর বিদ্যুৎ কিনতে পারা এবং সেই সাথে বিক্রি করতে পারা। আমি বিশ্বাস করি আমাদের মৌলিক নীতির ক্ষেত্রে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা কম বরং কিছু ক্ষেত্রে পরিমার্জনের প্রয়োজন রয়েছে।
সারাহ কুক বলেন, আমরা জাতীয় গ্রিডে সৌর বিদ্যুৎকে একীভূত করার এই উদ্যোগকে বিশেষভাবে সমর্থন করেছি। কারণ যত তাড়াতাড়ি নবায়নযোগ্য জ্বালানির পরিমাণ বাড়বে, ততই সাশ্রয়ী হবে এবং দ্রুত বাংলাদেশ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে। আমরা বিশ্বাস করি প্রকল্পটি ভোক্তাদের উপকারে এবং জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
ওয়াসিকা আয়েশা খান, এমপি বলেন, প্রকল্পটি গ্রামীণ জনগণের সুবিধার জন্য বিদ্যমান সম্পদ (সোলার হোম সিস্টেম এবং বৈদ্যুতিক থ্রি হুইলারের লিথিয়াম ব্যাটারি) ব্যবহার করছে এবং এদেরকে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে পরিণত করছে। এটি একটি চমৎকার উদ্যোগ এবং আমি এর পাশে আছি। আমাদের শুধু মনে রাখতে হবে যাতে ব্যাটারির সঠিক পুনর্ব্যবহার ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হয় এবং নারীরা এ ধরণের প্রকল্পে অংশগ্রহণ করে উপকৃত হন।
প্রকল্প থেকে সরাসরি উপকৃত ময়মনসিংহের সাদ্দাম বাজারের গ্রাহক মোঃ মকবুল হোসেন বলেন, আমরা জানতাম না যে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রি করা যায়। আমরা কেউই জানতাম না যে সোলার বৈদ্যুতিক তিন চাকার যানবাহনকে চার্জ করতে পারে। আমাদের নতুন কিছু শেখানোর জন্য এবং আমাদের জন্য অতিরিক্ত আয়ের উপায় তৈরি করার জন্য আমরা শক্তি ফাউন্ডেশন এবং সোলশেযারকে ধন্যবাদ জানাই।
শক্তি ফাউন্ডেশনের উপ নির্বাহী পরিচালক ইমরান আহমেদ বলেন, শক্তি ফাউন্ডেশন প্রতিনিয়ত টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য সবুজ কর্মসংস্থান এবং উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য। আমরা এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পেরে গর্বিত। কারণ এটি সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহারকারীদের অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করেছে এবং তাদের জন্য আয়ের একটি অতিরিক্ত পথ তৈরি দিয়েছে। এটিকে বড় আকারে বাস্তবায়ন করা গেলে, ২০৪১ সালের মধ্যে মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনায় (এমসিপিপি) নির্ধারিত পুনবীকিরণযোগ্য জ্বালানির পরিমাণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
স্থানীয় সবুজ উদ্যোক্তাদের সম্পর্কে সোলশেয়ারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডঃ সেবাসচিয়ান গ্রোহ বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার এক তৃতীয়াংশ আমদানি করা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। এই জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ প্রতি কিলোওয়াট আওয়ার প্রায় ০.১৮ ইউএস ডলার। এই সকল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা গ্রিন প্রিমিয়াম বা বেশি দাম চাইছেন না, এক্ই দাম চাইছেন এবং তারা ডলার চাইছেন না, বাংলাদেশি টাকা চাইছেন। স্টোরেজ দ্বারা সমর্থিত নবায়নযোগ্য শক্তি সরবরাহ করার সময তারা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন না।
আরএস