ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

এডিবির সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি বাংলাদেশের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

এডিবির সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি বাংলাদেশের

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। সংস্থাটি বাংলাদেশকে পাঁচটি প্রকল্পে ১.০২৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এডিবির এ ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকারের পক্ষে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এডিবির পক্ষে কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং চুক্তিতে সই করেন।

যেসব প্রকল্পে এ ঋণ দেওয়া হবে ॥ ‘স্মার্ট মিটারিং এনার্জি এফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’, ‘ভ্যাকসিন, থেরাপিউটিকস এবং ডায়াগনস্টিকস ম্যানুফ্যাকচারিং এবং রেগুলেটরি স্ট্রেন্দেনিং প্রজেক্ট’, পার্বত্য চট্টগ্রাম অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং শহরে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প’, ‘কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি শিক্ষা প্রজেক্ট’, তৃতীয় ধাপে দ্বিতীয় দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ঢাকা-উত্তর-পশ্চিম করিডর সড়ক প্রজেক্ট।’
স্মার্ট মিটারিং এনার্জি এফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টে ॥ এই প্রকল্পে ২০ কোটি ডলারের ঋণ দিচ্ছে এডিবি। সংস্থাটির এই ঋণে বাংলাদেশকে স্মার্ট মিটারিংয়ের মাধ্যমে দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি ক্লিন এনার্জি সলিউশনে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করবে। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি এবং নারায়ণগঞ্জে আবাসিক গ্রাহকদের জন্য ছয় লাখ ৫০ হাজার স্মার্ট প্রিপেইড গ্যাস মিটারের সংযোগ দেওয়া হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে বছরে প্রায় চার লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন হ্রাস করবে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিতাস জানায়, ১১ লাখ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পের জন্য তিতাস গ্যাস ও বিশ্বব্যাংক-এর মধ্যে গত ২৩ নভেম্বর এবং স্মার্ট মিটারিং এনার্জি এফিসিয়েন্সি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট-এর আওতায় ছয় দশমিক ৫০ লাখ স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পের জন্য তিতাস গ্যাস ও এডিবির মধ্যে মঙ্গলবার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানে তিতাস গ্যাস, পেট্রোবাংলা, মন্ত্রণালয়, এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 
ভ্যাকসিন, থেরাপিউটিকস, ডায়াগনস্টিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ও রেগুলেটরি স্ট্রেন্থেনিং প্রজেক্ট ॥ এই প্রকল্পে ৩৩.৬৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি। এডিবির এই ঋণে সরকার দেশীয় ভ্যাকসিন, থেরাপিউটিকস এবং ডায়াগনস্টিকস উৎপাদন ক্ষমতা স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া ভ্যাকসিন সরবরাহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় নিয়ন্ত্রককে শক্তিশালী করা হবে। গোপালগঞ্জে এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) বিদ্যমান অবস্থানে একটি ভ্যাকসিন, থেরাপিউটিক এবং ডায়াগনস্টিকস ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাসিলিটি ও গুদামজাতকরণ ইউনিট স্থাপন করা হবে। যেখান থেকে প্রতি বছরে ৫৮ মিলিয়ন ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা সৃষ্টি হবে।
চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন সেবা প্রদান প্রকল্প ॥ বান্দরবান, লামা ও রাঙ্গামাটি শহরে বিশুদ্ধ পানি এবং স্যানিটেশন পরিষেবা নিশ্চিতে ৯ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এডিবি। এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং প্রকল্পটিতে অর্থায়নের বিষয়ে বলেছেন, ‘আমরা বিশুদ্ধ পানি এবং স্যানিটেশন পরিষেবা প্রদান এবং পিছিয়ে থাকা পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নতির মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জলবায়ু-সহনশীল উন্নয়ন অনুসরণে সরকারকে সমর্থন করতে পেরে আনন্দিত। এডিবির এই অর্থ উন্নত পরিষেবাগুলো পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি হ্রাস করবে এবং স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সুযোগগুলোকে বাড়িয়ে তুলবে।
কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি শিক্ষা প্রজেক্ট ॥ এডিবি বাংলাদেশে প্রযুক্তি ও প্রকৌশল কর্মসূচিকে শক্তিশালী করতে ১০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। এই ঋণে দেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) প্রোগ্রামের উন্নতি হবে বলে জানানো হয়। প্রকল্পটির অর্থায়নের বিষয়ে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডমিন গিনটিং বলেছেন, এই প্রকল্পটি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব প্রযুক্তি গ্রহণকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়ন এবং দেশকে ডিজিটালযোগ্য তরুণ মানবসম্পদ ও উদ্যোক্তা তৈরি করবে।
ঢাকা-উত্তর-পশ্চিম আন্তর্জাতিক সড়ক করিডর আপগ্রেড প্রজেক্ট ॥ ঢাকা-উত্তর-পশ্চিম আন্তর্জাতিক সড়ক করিডর আপগ্রেড প্রজেক্টে এডিবি ৩০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। এ ঋণে বাংলাদেশে ঢাকা-উত্তর-পশ্চিম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডরকে আপগ্রেড করতে সহায়তা করা হবে। এই প্রকল্পটি সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং উপ-আঞ্চলিক সংযোগ ও বাণিজ্যের উন্নতির জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে সমর্থন করে। এটি ঢাকা-উত্তর-পশ্চিম সড়ক করিডরে যানবাহন পরিচালনার খরচ, ভ্রমণের সময়, যানবাহনের নির্গমন, দুর্ঘটনা এবং যানজট কমাতে সাহায্য করবে বলেই অভিমত কান্ট্রি ডিরেক্টর গিনটিংয়ের।

×