প্রতীকী ছবি
মানবিক কর্মকান্ডে, বিশেষ করে মানবিক তহবিলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অপরিহার্য বলে মত প্রকাশ করেন উন্নয়ন ও মানবিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ। তাঁরা এ ধরনের সকল কার্যক্রমে মানবিধারসহ জনগণের সকল অধিকার নিশ্চিত করার জন্যও সুপারিশ করেন।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বেঠকে তাঁরা এসব কথা বলেন। বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তায় আদর্শ মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রণীত অন্যতম একটি নির্দেশিকা হলো কোর হিউম্যানিটারিয়ান কোয়াালিটি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি স্ট্যান্ডার্ড (সিএইচএস। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে প্রণীত হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী শত শত সংস্থা তাদের মানবিক কর্মকান্ডে এই আদর্শমানগুলো ব্যবহার করছে। বর্তমানে এই আদর্শমানগুলোর একটি পর্যালোচনা চলছে, এটিকে বর্তমান বিশ্বের প্রয়োজন ও বাস্তবতার আলোকে অধিকতর কার্যকর করে তোলার লক্ষ্যে। তাঁরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও আজ রাজধানীর একটি হোটেলে নেতৃস্থানীয় মানবিক ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
কোস্ট ফাউন্ডেশন এবং সিএইচএস এলায়েন্স আয়োজিত ‘সিএইচ রিভিশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই গোলটেবিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপিরচালক মো. মিজানুর রহমান কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় এবং দুর্যোগ ফোরামের সদস্য সচিব নঈম গরহর ওয়াহরা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএইচএস এলায়েন্সের পলিসি এন্ড আউটরিচ সিনিয়র ডিরেক্টর বোনাভেনচার জিবেটু সোকপন। এতে আরও বক্তৃতা করেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির কার্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ন এফেয়ার্স এভিাইসর এলাইডা ভালদেস, সিএইচএস এলায়েন্সের ডিরেক্টর পলিসি, ইম্প্যাকট এন্ড এডভোকেসি ট্রড স্ট্র্যানড।
বোনাভেনচার বলেন, আদর্শমান সংশোধনের মূল উদ্দেশ্য হলো বর্তমান সময়ের সঙ্গে আদর্শমানকে প্রাসঙ্গিক করে তোলা। এলাইদা ভালদেস মানবিক সহায়তা কর্মসূচিতে মানবতা, নিরপেক্ষতা, বৈষম্যহীনতা বজায় রাখা এবং স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষ সমতা এবং এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উপরও জোর দেন, যাতে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাঁদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়। ট্রড স্ট্র্যানড মানবিক কর্মকান্ডে গুণগতমান এবং জবাবদিহিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সিএইচএস মানবিক আদর্শমানের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা সকল কর্মসূচিতে জনগণকে কেন্দ্রে রাখে। নাঈম গওহর ওয়াহরা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের ডিজাস্টার স্ট্যান্ডিং অর্ডার এবং সিএইচএস এর ভাষার মধ্যে সামঞ্জস্য থাকা উচিৎ। সরকারের উচিত সিএইচএসকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং এই মানগুলিকে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ব্যবহারবান্ধব করে তুলতে হজবে যাতে সঙ্কট ও বিপদের সময় জনগণের জন্য এগুলো প্রয়োগ হরা যায়। মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে মানবিক কর্মসূচি পরিচালনাসহ দুর্যোগ মোকাবেলার প্রায় সকল ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। দেশে জীবন-জীবিকার ক্ষতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সিএইচএস আমাদের কাজকে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
বৈঠকে আরও বক্তৃতা করেন, বিডিআরসিএস’র এম এ হালিম, দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ মোঃ আব্দুল লতিফ, ইসলামিক রিলিফ’র ময়েন ইউ আহমেদ, ইউএসএআইডি’র শফিকুর রহমান, এনজিও প্ল্যাটফর্ম’র আমির হোসেন, অ্যাকশন এইড’র শাহিনুজ্জামান, জাগো নারীর ডিউক ইভন আমিন, খ্রিস্টান এইড’র মো. শামসুজ্জামান। ওয়ার্ল্ড ভিশন’র রাহাত আরা, সংগ্রাম’র চৌধুরী মো. মঈন, ডব্লিউএফপি’র রকিবুল আলম, এনজিও ফোরাম’র শহিদুল আলম, বিএনপিএস’র শাহিদা পারভিন, কক্সবাজার কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন’র সুব্রত দত্ত, এডুকো’র কাজী আবদুল কাদির, কারিতাস’র সেবাস্টিয়ান রোজারিও এবং সিসিডিবি থেকে আবদুর রহমান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ব্র্যাক, কেয়ার, সিসিডিবি, সিডিডি, আইএফআরসি, আইওএম, নাহাব, নিড অ্যাসেসমেন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ, নিরাপদ, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল, অক্সফাম, সেভ দ্য চিলড্রেন, টিয়ারফান্ড এবং ইউনিসফ প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
কাওসার