ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

সিপিডির গবেষণা প্রতিবেদনে তথ্য

পোশাকশিল্পে এখনো নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ৩০ আগস্ট ২০২৩

পোশাকশিল্পে এখনো নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে

দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ৮৫৬টি গার্মেন্টসকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে উদ্যোগ

দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ৮৫৬টি গার্মেন্টসকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। বুধবার ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা: অর্জন ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম গবেষণা প্রতিবেদনের এ তথ্য তুলে ধরেন। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
সিপিডির এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে, ৮৫৬টি পোশাক কারখানা কোনো ধরনের তদারকি ব্যবস্থার মধ্যে নেই, যদিও তারা অপ্রচলিত বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে। এসব কারখানার কোনোটিতে দুর্ঘটনা ঘটলে পুরো পোশাক খাতের ওপর নতুন করে চাপ তৈরি হবে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর দেশী-বিদেশী একাধিক উদ্যোগের অধীনে তৈরি পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কাজ শুরু হয়েছিল। তবে গত ১০ বছরে কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে অনেক কাজ হলেও তা পুরোপুরি শেষ হয়নি। ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েই গেছে। প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘দেশে এখনো অনেক ঝুঁকিপূর্ণ গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি রয়েছে।’
আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিলের (আরএসসি) আওতায় ১৮৮৭টি কারখানা মনিটরিংয়ের মধ্যে রয়েছে। আর নিরাপদ হিসেবে ৩৫০টি কারখানা শনাক্ত করা হয়েছে। অপরদিকে রেমিডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেলের (আরসিসি) আওতায় ৬৫৯টি কারখানা মনিটরিংয়ের আওতায় রয়েছে। সব মিলিয়ে ২ হাজার ৮৯৬টি কারখানা আরএসিসি ও আরসিসির মনিটরিংয়ে রয়েছে। কিন্তু ৮৫৬টি কারখানা বর্তমানে কোনো মনিটরিংয়ের আওতায় নেই।’ তিনি উল্লেখ করেন, কীভাবে এই কারখানাগুলোকে নিরাপত্তার আওতায় আনা যায় সেদিকে চোখ রাখা উচিত।

তিনি বলেন, ‘৮৫৬টি কারখানায় কাজ চলছে, রপ্তানিও হচ্ছে। এরা সবাই কাজই করছে, তাহলে ওই কারখানাগুলো মনিটরিং কে করবে? এই সংখ্যাটি দিন দিন বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা মোট কারখানার ২২-২৩ শতাংশ। যা ভবিষ্যতে ৩০ শতাংশ হতে পারে।’ প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন সংস্থাটির সিনিয়র গবেষণা সহযোগী তামীম আহমেদ।
সিপিডির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানায় গত কয়েক বছরে অগ্নিদুর্ঘটনা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ২০২০ সালে ১৭৭টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছিল। গত বছর সেটি বেড়ে হয়েছে ২৪১টি। অপরদিকে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা এখনো শূন্যে নামেনি। ২০২১ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন ১৩ জন পোশাকশ্রমিক। আর গত বছর মারা গেছেন ৪ জন।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট ‘অ্যাকর্ড’ এবং উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট ‘অ্যালায়েন্স’ তৈরি পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কাজ শুরু করে। 
অ্যাকর্ড চলে যাওয়ার পর দায়িত্ব নেয় আরএমজি সাসটেইনিবিলিট কাউন্সিল (আরএসসি)। আর অ্যালায়েন্সের দায়িত্ব নেয় ‘নিরাপন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আরএসসির অধীনে বর্তমানে ১ হাজার ৮৮৭টি কারখানা রয়েছে। আর নিরাপনে আছে ৩২০টি কারখানা। তবে বর্তমানে দেশে নিরাপনের কোনো কার্যক্রম নেই।

×