ডলার
প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা ও সক্ষমতার অভাবে পাইপলাইনে জমে গেছে প্রায় ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব অর্থ দ্রুত ছাড় করা হলে রিজার্ভ বাড়বে; আরও গতিশীল হবে অর্থনীতি।
২০২২ সালের জুন পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগিদের কাছ থেকে বাংলাদেশ ৭ হাজার ৭১৫ কোটি বা ৭৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে। একই সময়ে অনুদান পেয়েছে ১ হাজার ৭৫৪ কোটি বা ১৭ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ-ইআরডি বলছে, স্বাধীনতার ৫১ বছরে বিভিন্ন প্রকল্পের ঋণ ও অনুদান মিলে বাংলাদেশ ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার গ্রহণ করলেও পাইপলাইনে রয়েছে আরও ৪৫ বিলিয়ন ডলার। আটকে থাকা এই অর্থ ছাড় করাতে পারলে রিজার্ভের ওপর চাপ কমে যাবে বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অনেক প্রজেক্টে যেটা খরচ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল সেই টাকাটা পাইপলাইনে জমা রয়েছে। সেই টাকাটা দ্রুততার সঙ্গে ছাড়া করে সাশ্রয়ী প্রকল্পে ব্যয় করার সঙ্গে সঙ্গে কারেন্সি অ্যাকাউন্টেও এটার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কেননা তখন এই টাকাটা আমাদের রিজার্ভে এসে জমা হবে।”
বৈদেশিক ঋণ গ্রহণে শীর্ষে বিদ্যুৎ খাত। এ খাতে এসেছে ১৮ বিলিয়ন ডলার। এরপরেই জ্বালানি খাত পেয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ তৃতীয় সর্বোচ্চ ঋণ-সহায়তা এসেছে সরকারি সাধারণ সেবা খাতে।
ঋণদাতাদের মধ্যে শীর্ষে বিশ্বব্যাংক। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংক দিয়েছে প্রায় ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ২০ বিলিয়ন ডলার, জাপান ১৪ এবং চীন দিয়েছে ৭ বিলিয়ন ডলার।
পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “যখন আমাদের টাকার দরকার তখন বিশাল অংকের টাকা পাইপলাইনে রয়েছে। কিন্তু আমরা টাকা পাচ্ছি না। এর কারণটা আমরা নিজেরাই।”
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সক্ষমতার অভাবে বিদেশি ঋণ-সহায়তা আদায় ও ব্যবহারে জটিলতা তৈরি হয়। প্রকল্পে স্থানীয় মুদ্রার ব্যবহারের কড়াকড়ি আরোপ করার পরামর্শ তাদের।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “দেশি টাকাটা আগে ব্যবহার করার ফলে ফরেন এইডের ব্যবহার কমে যাচ্ছে।”
প্রকল্প বাস্তবায়নে কর্মকর্তাদের দুর্বলতা রয়েছে বলে স্বীকার করছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীও।
প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, “তারা ফাইন্যান্স করবে কিন্তু আমাদের দায়িত্ব হলো প্রজেক্ট তৈরি করা। সেটা করতে হলে আমাদের অনেক দক্ষতা, সক্ষমতা, অর্থনীতির ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে অনেক দক্ষ হতে পবে।”
বিদেশি ঋণ-সহায়তার আদায় ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এমএস