![জুন মাসে লেনদেন ৩৬ হাজার কোটি টাকা জুন মাসে লেনদেন ৩৬ হাজার কোটি টাকা](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2022June/art-1-2209141837.jpg)
ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ড
যতই দিন যাচ্ছে ততই জনপ্রিয় হচ্ছে ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ড। সর্বশেষ হিসাব বলছে, কার্ডে একক মাস জুনে লেনদেন হয়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ডেবিট কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ ৩৪ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। আর ক্রেডিট কার্ডে হয়েছে ২ হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অথচ করোনা আসার আগে এবং করোনার মধ্যে কার্ডে মাসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৪ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ লেনদেন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনার প্রকোপ কমে আসায় জীবনযাত্রা অনেকটা স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। আবার ধীরে ধীরে কর্মচঞ্চল হচ্ছে অর্থনীতি। এমন অবস্থায় মানুষ খরচ বাড়িয়ে দেয়ায় বাড়ছে কার্ডের ব্যবহার। এখনও দেশের বড় অংশের মানুষের ব্যক্তিগত লেনদেন নগদ টাকায় হয়। কিন্তু আধুনিক জীবন ব্যবস্থায় দিনকে দিন লেনদেনের ক্ষেত্রে নগদ টাকার ব্যবহার কমছে। গ্রাহকরা বলছেন, নগদ টাকা ঝুঁকি বেশি। কিন্তু কার্ডে টাকা থাকলে সে ক্ষেত্রে তুলনামূলক ঝুঁকি কম।
এ ছাড়া পকেটে টাকা রাখার চেয়ে কার্ড রাখা বেশি নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক। ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে অনেক গ্রাহক কার্ড নিতে চাইতেন না। কিন্তু এখন অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। অনেকে কার্ডে ঝুঁকছেন। সাম্প্রতিক কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার কারণে ই-কমার্সে লেনদেন অনেক কমে গেছে। সেটি না হলে কার্ডে লেনদেন আরও বাড়ত।
প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাঙ্কিংয়ে গ্রাহকদের উৎসাহিত করেছে ব্যাংকগুলো। রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারী খাতের সব ব্যাংকই এখন প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। এসব সেবায় যোগ হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম, অনলাইন সিআইবি রিপোর্ট, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রি-পেইড কার্ড, ভিসা কার্ড এবং বিভিন্ন প্রযুক্তির এটিএম। এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন ও জমা, রেমিটেন্স বিতরণ, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ ও বেতন-ভাতা প্রদান সবই সম্ভব।
২০২১ সাল শেষে ডেবিট কার্ড ছিল ২ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫৯টি। ছয় মাসে সেটা বেড়ে হয়েছে দুই কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ৩১টি। কার্ড বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনও। ডিসেম্বরে ডেবিট কার্ডে লেনদেন হয় ২৪ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। জুনে লেনদেন ৩৪ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালের পুরোটা সময়ে ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ও লেনদেন বেড়েছে। জানুয়ারিতে কার্ড ছিল ২ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৫২৬টি। এসব কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ ১৮ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। বছরের শেষ ডিসেম্বরে কার্ড বেড়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫৯টিতে দাঁড়ায়। লেনদেন হয় ২৪ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের ছয় মাসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জনুয়ারিতে ডেবিট কার্ড ছিল ২ কোটি ৫৫ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬৮টি। লেনদেন হয় ২৪ হাজার ৭০১ কোটি টাকা।
তিন মাস পর মার্চ শেষে কার্ডের সংখ্যা বেড়ে হয় ২ কোটি ২৪ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৭টি। লেনদেনও বেড়ে হয় ২২ হাজার কোটি টাকা। এর তিন মাস পর জুন শেষে ডেবিট কার্ড ব্যবহার আরও বাড়ে। এ সময় কার্ড ছিল ২ কোটি ৬৪ লাখ ৪৭ হাজার ২০১টি। এসব কার্ডে ২৮ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়।