ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

আরটিজিএস-এর মাধ্যমে আন্তঃব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার তাৎক্ষণিক লেনদেন

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২; আপডেট: ২০:২৯, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

আরটিজিএস-এর মাধ্যমে আন্তঃব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার তাৎক্ষণিক লেনদেন

ডলার 

দেশে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে তাৎক্ষণিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন চালু হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থাপিত রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট বা আরটিজিএস-এর মাধ্যমে এ লেনদেন অনলাইনে নিষ্পত্তি হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মার্কিন ডলার, পাউন্ড, ইউরো, কানাডিয়ান ডলার ও জাপানের ইয়েন এ পদ্ধতিতে ক্লিয়ারিং ও নিষ্পত্তি করছে ব্যাংকগুলো।    

রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গবর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, ব্যবসায়ী‌দের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই‌য়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, এমসিসিআই সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী সেলিম আর এফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।

দেশে এতদিন মার্কিন ডলার, যুক্তরাজ্যের পাউন্ড, ইউরো, কানাডার ডলার ও জাপানের ইয়েন- এই পাঁচটি মুদ্রা কাগজ-কলমভিত্তিক সনাতন লেনদেন ব্যবস্থায় নিষ্পত্তি হতো। এ পদ্ধতিতে এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকের সঙ্গে কাগুজে নথি ব্যবহার করে ব্যাংকের কর্মকর্তারা হাজির হয়ে লেনদেন নিষ্পত্তি করে থাকেন। এতে সময় ও অর্থ দুটোই বেশি ব্যয় হতো। তবে আজ থেকে আরটিজিএস পদ্ধতিতে ঝামেলা ছাড়াই তাৎক্ষণিকভাবে লেনদেন নিষ্পত্তি করতে পারবে ব্যাংকগুলো। পাঁচটি বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্গে চীনা মুদ্রা ইউয়ানও লেনদেন করা যাবে। এর আগে গত ২৮ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করা হয়।

নীতিমালায় বলা হয়, আরটিজিএস একটি স্বতন্ত্র লেনদেন প্ল্যাটফর্ম পদ্ধতি। এর সঙ্গে অন্য কোনো প্ল্যাটফর্মের সংযুক্তি নেই। এ পদ্ধতিতে লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য একটি বৈদেশিক মুদ্রা হিসাব খুলতে হবে। এখান থেকে কেবল ডলারের বিপরীতে ডলার, ইউরোর বিপরীতে ইউরো- এভাবে লেনদেন নিষ্পত্তি করা যাবে। এক মুদ্রার বিপরীতে অন্য বৈদেশিক মুদ্রায় নিষ্পত্তি করা যাবে না। তবে যেকোনো অঙ্কের লেনদেন নিষ্পত্তিতে কোনো বাধা নেই।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরিশোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সুবিধাভোগীর অ্যাকাউন্টের ধরন উল্লেখ করতে হবে। একটি লেনদেনে ব্যাংক সর্বোচ্চ ১০০ টাকা চার্জ করতে পারবে। আরটিজিএস পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রায় আন্তঃব্যাংক তারল্য সুবিধা নেওয়া যাবে না। লেনদেন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে গাইডলাইনস ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন (জিইএফটি) মেনে চলতে হবে। এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকে অর্থ পাঠানোর পর সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টার মধ্যে সুবিধাভোগীর হিসাবে অর্থ দিতে হবে। এটি না করতে না পারলে অর্থ ফেরত যাবে। এ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে আরটিজিএসের স্থানীয় মুদ্রায় নিষ্পত্তির নীতিমালা মেনে চলতে হবে।

দেশে ২০১৫ সাল থেকে চালু হওয়া আরটিজিএস থেকে যেকোনো অংকের অর্থ পরিশোধ নিষ্পত্তিতে সর্বোচ্চ ৩০ সেকেন্ড সময় লাগে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ১১ হাজার শাখার বেশিরভাগই এ ব্যবস্থায় যুক্ত রয়েছে। গত জুলাইয়ে ৬ লাখ ২৩ হাজার লেনদেনের বিপরীতে ৪ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা নিষ্পত্তি হয়েছে। গত জুন থেকে যুক্ত হয়েছে ১৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

 

সম্পর্কিত বিষয়:

×