ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন
জতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ করতে চায় স্থানীয় এনজিওরা। তারা দাবি জানান, আইএনজিদের পরিবর্তে উন্মুক্ত, প্রতিযোগিতামূলক ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে তহবিল বিতরণের।
শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ সিএসও এনজিও কো-অর্ডিনেশন প্রসেস (বিডিসিএসও) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ সুপারিশ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী।
সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় স্থানীয় এনজিওদের মাঠ পর্যায়ের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে জাতিসংঘ ও আইএনজিওগুলোকে শুধু মনিটরিং এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার মধ্যে কার্যক্রম সীমিত রাখা ও একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ত্রাণ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, সিইআরএফ তহবিল বিতরণের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের উচিত স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক নীতি বাস্তবায়ন করা। জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারীর ঘোষণা অনুসারে পাঁচ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করা হয়েছে। আগের মতো এই তহবিলটি শুধু জাতিসংঘের সংস্থা ও রেডক্রস এবং বড় বড় আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ করা উচিত নয়, যা আমরা আগে দেখে এসেছি।
রেজাউল করিম বলেন, এরই মধ্যে জাতিসংঘ কর্তৃক দুই দশমিক পাঁচ মিলিয়ন সংগ্রহ করা হয়েছে, আইএনজিওগুলো কী পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে এর সামান্য তথ্যই এ পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়েছে।
এ সময় তিনি সিলেটে টেকসই ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সুশীল সমাজ গঠনের লক্ষ্যে জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানান। উন্মুক্ত, প্রতিযোগিতামূলক ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে তহবিল বিতরণের দাবি জানান জলবায়ু বিশেষজ্ঞ কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক।
দুর্যোগ ফোরাম সচিব গওহর নঈম ওয়াহরা বলেন, ত্রাণ কর্মসূচি সমন্বয়ের জন্য সিলেট ও সুনামগঞ্জে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ত্রাণ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন।
তিনি জাতিসংঘসহ সব সংস্থাকে তাদের অর্থ এবং পরিকল্পনা বিষয়ক তথ্য সিলেটের সংশ্লিষ্ট ইউএনও ও জেলা প্রশাসকদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই অর্থ সাহায্যকে জনগণের অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, কোনো দয়া হিসেবে নয়।
অ্যাওয়ার্ডের নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্থানীয় এনজিওগুলোর সঙ্গে কাজ করার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, বিশেষ করে তারা জানে কীভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছাতে হয়, কম খরচে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হয় এবং কর্মসূচি সমন্বয়কারী প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত একটা যোগাযোগ থাকে।
গত মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে টানা ভারি বৃষ্টি হয়। এছাড়া উজানে ভারতের মেঘালয়, আসাম ও ত্রিপুরায় কয়েকদিন ধরে টানা ভারি বৃষ্টিপাত হয়। দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে কয়েকদিনের অবিরাম ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে ১৩ মে থেকে সিলেটে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। এ অবস্থায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও আশপাশের জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পর্যায়ক্রমে এ বন্যা দেশের ১৮টি জেলায় বিস্তৃতি লাভ করে।
কাওসার রহমান