ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ভ্যাটে ৭৫ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা;###;আয়করে ৭৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা;###;আমদানি শুল্কে ৫৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা

বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দুই লাখ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১৯ মে ২০১৬

বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা দুই লাখ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেটের ৫৯ শতাংশ অর্থ যোগান দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এনবিআর রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে সরকার। একই কারণে গত অর্থবছরেও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করেছিল সরকার। গত দুই অর্থবছরে একই ঘটনা ঘটলেও অবস্থান পাল্টায়নি সরকার। আগামী অর্থবছরেও বাজেটের বড় অংশ অর্থায়নের যোগান দিতে হচ্ছে এনবিআরকে। আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরের জন্য ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এনবিআরের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় লক্ষ্যমাত্রা। আসছে ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে এনবিআরের জন্য ওই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকার যোগান দিতে হবে এনবিআরকে। অর্থাৎ বাজেটের ৬৬ শতাংশ অর্থ দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব থেকে আহরণ করা হবে। এতে করে নতুন করে আরেক ধাপ জনগণের ওপর করের চাপ বাড়বে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আগামী বাজেটে ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সর্বোচ্চ প্রায় সাড়ে ৩৭ শতাংশ ভ্যাট থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাবে ভ্যাট খাত থেকে প্রায় ৭৫ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে। এনবিআরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়করে প্রায় ৭৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩৬ শতাংশ এই খাত থেকে আহরণ করা হবে। এছাড়া আমদানি ও রফতানি শুল্ক থেকে প্রায় ৫৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২৬ শতাংশ। চলতি ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে বাজেটে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে আয়কর খাতে ৬৫ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা, মূল্য সংযোজন করে (মূসক) ৬৩ হাজার ৯০২ কোটি টাকা এবং শুল্ক থেকে ৪৬ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যদিও চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ২৫ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা কমিয়ে নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, মোট দেশজ সম্পদের (জিডিপির) তুলনায় আমাদের রাজস্ব আহরণ পরিমাণ অনেকটাই কম। সেই দিক থেকে গত অর্থবছরের চেয়ে এবার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরার যৌক্তিকতা আছে। তবে একই সঙ্গে নতুন করে জনগণের ওপর করের চাপ না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়াতে হবে সরকারকে। তিনি বলেন, আগামী বাজেটে এনবিআরের প্রায় ৩৭ শতাংশ অর্থ ভ্যাট থেকে আদায়ের করার কথা রয়েছে, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার সবচেয়ে বেশি। এতে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষের ওপর রাজস্বের বোঝা বাড়বে। আসছে বড় অঙ্কের বাজেটে অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে ব্যয় বহন করার যৌক্তিকতা আছে। তবে অবশ্যই ব্যয় সমন্বয়ের দিকে লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দেন এই অর্থনীতিবিদ।
×