
কৃষি ঋণে খেলাপি কৃষকের হার তুলনামূলক কম
কৃষি ঋণে খেলাপি কৃষকের হার তুলনামূলক কম। কৃষি ঋণ বিতরণের পাশাপাশি কৃষকের ফেরত দেওয়া ঋণের হার সন্তোষজনক হলেও ২০ শতাংশ ঋণ বিতরণে ব্যর্থ ১৪ ব্যাংক।
খাদ্য উৎপাদনের ঘাটতি মেটাতে দেশের কৃষকদের মাঝে চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোকে ৩৮ হাজার কোটি টাকার কৃষি ও পল্লী ঋণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথম সাত মাসে ব্যাংকগুলো ১৯ হাজার ২১৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রা ৫০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। যদিও এই সময়ে দুটি ব্যাংক কোনো ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। আর তিনটি ব্যাংকের ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১০ শতাংশেরও কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দুটি ব্যাংক কৃষি ও পল্লী খাতে কোনো ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। ব্যাংক দুটি হচ্ছে বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংক এবং বিদেশী উরি ব্যাংক। এছাড়া অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ১০ শতাংশেরও কম ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকগুলো হচ্ছেÑবেসরকারি খাতের মধুমতি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং বিদেশী এইচএসবিসি।
এছাড়া শরিয়াহভিত্তিক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক বিতরণ করেছে ১০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এর মধ্যে ১০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা থাকা ইউনিয়ন ব্যাংক ৭ মাসে মাত্র ৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার কৃষি ও পলী ঋণ বিতরণ করেছে। আর ৩৩ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্য থাকা মধুমতি ব্যাংক বিতরণ করেছে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বা লক্ষ্যমাত্রার ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
এছাড়া বিদেশী এইচএসবিসি ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। ব্যাংকটির লক্ষ্য ছিল ২৮৫ কোটি। ৭ মাসে ব্যাংকটি বিতরণ করেছে ২৫ কোটি টাকা। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার কৃষি ও কৃষিসংশ্লিষ্ট কাজে অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য মোট ঋণের অন্তত ২ শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণ বাধ্যতামূলক করেছে। যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করবে না, তাদের জরিমানার ব্যবস্থা রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
একইসঙ্গে সেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার অর্থ বিতরণে ব্যর্থ হবে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট তহবিলে ওই অর্থ জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এর ফলে প্রতিবছরই সাধারণ ঋণ বিতরণের পাশাপাশি বাড়ছে কৃষি ঋণ বিতরণ। এজন্য বছরের শুরুতে লক্ষ্যও ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। যাতে বছরের বারো মাস বিশেষ করে ফসল চাষের শুরুতে কৃষকরা সময়মতো ঋণ পান।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে কৃষি ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার কোটি টাকারও কম। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বিতরণকৃত কৃষি ও পল্লী ঋণের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৮ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। এছাড়া বিদেশী ব্যাংকগুলো ৭৮৩ কোটি এবং বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১০ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা।