ফের বাড়তে শুরু করছে ডলারের দাম
স্থিতিশীলতার পর ফের বাড়তে শুরু করছে ডলারের দাম। ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক ডলার-সংকট মেটাতে বাড়তি দামে রেমিটেন্সের বৈদেশিক মুদ্রা কেনা শুরু করেছে। এতে খরচ বাড়ায় আমদানিতেও চড়া দামে ডলার বিক্রি হচ্ছে। এসব ব্যাংক সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা দরে রেমিটেন্সের ডলার কিনে আমদানিতে সর্বোচ্চ ১২৪ টাকায় বিক্রি করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি এক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনকণ্ঠকে বলেন, আইএমএফ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ডলারের রেট নির্ধারণে ক্রলিং পেগ বাস্তবায়নের জন্য চাপ দিচ্ছে। সেখান থেকেই আমাদের ধারণা, আগামীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্কেট ওপেন করে দিয়ে ক্রলিং পেগ পুরোদমে চালু করতে পারে। ফলে ডলারের দাম বাড়তে পারে। এমন শঙ্কায় গ্রাহকরা তাদের পেমেন্টগুলো ক্লিয়ার করে দিতে চাচ্ছেন। একইসঙ্গে বিদেশী বড় এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোও এ সুযোগে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানান।
ব্যাংকাররা বলছেন, রেমিটেন্সের ডলারের দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায় আমদানি এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) নিষ্পত্তির ডলারের দাম বেড়ে ১২৩.৮০-১২৫ টাকায় পৌঁছেছে। এতে আমদানি খরচ বেড়ে গিয়ে তা মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দিতে পারে বলে মনে করছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সীমা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১২০ টাকায় ডলার বেচাকেনার কথা। নির্ধারিত দরের চেয়ে তিন থেকে চার টাকা বেশিতে ব্যাংকে ডলার বেচাকেনা হচ্ছে। তবে ব্যাংকগুলো নিজস্ব তহবিল থেকে প্রণোদনা দিয়ে বাড়তি দাম সমন্বয় করবে বলে জানা গেছে। ফলে ডলারের দাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সীমার মধ্যেই থাকছে। তবে প্রবাসীরা প্রণোদনা বাবদ বাড়তি পাচ্ছেন আড়াই শতাংশ। সূত্র জানায়, আমদানিতে ডলারের দাম বাড়ানোর ফলে খরচ বেড়ে যাবে। ফলে বাজারে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপও বাড়বে। এখনো মূল্যস্ফীতিতে আমদানিজনিত চাপ রয়ে গেছে। ডলারের বাড়তি দাম এই চাপকে আরও বাড়িয়ে দেবে।
১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেওয়া এক সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়, এখন থেকে আমদানির দায় নিয়মিত শোধ করতে হবে। কোনো দেনা বকেয়া রাখা যাবে না। কোনো ব্যাংকের আমদানির দায় বকেয়া থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ হুঁশিয়ারির পর ব্যাংকগুলোতে আমদানির বকেয়াসহ চলতি দায় পরিশোধের চাপ বেড়ে যায়। এতে ডলারের চাহিদাও বাড়ে।
হুমায়ুন কবির