দুর্বল ছয়টি ব্যাংকে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে
নতুন টাকা ছাপিয়ে দেশের দুর্বল ছয়টি ব্যাংকে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, আগামী রবিবার থেকে সংকট কেটে যাবে। তবে প্রয়োজন ছাড়া গ্রাহকদের অতিরিক্ত টাকা তুলতে নিরুৎসাহিত করেন তিনি।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে এসব টাকা তুলে নেওয়া হবে। আমাদের টাইট পলিসি থাকবে। এক হাতে দেব, অন্য হাতে নেব। এতে বাজারেও অস্থিরতা তৈরি হবে না। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহযোগিতা দিচ্ছি। আমানতকারীদের সুরক্ষার জন্য এটি দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে শাখাগুলোয় যে অস্থিরতা ছিল সেটি থেকে বেরিয়ে এসেছি। শাখাগুলোয় রবিবার থেকে সবাই (গ্রাহক) নিজ নিজ চাহিদা অনুযায়ী টাকা পাবেন।
আমানতকারীদের উদ্দেশে গভর্নর বলেন, আমানতকারীদের টাকা নিরাপদে আছে, আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। আপনারা যে ব্যাংকেই টাকা রেখে থাকুন নিরাপদে থাকবে, সমস্যা হবে না। আপনাদের যতটুকু টাকা প্রয়োজন ততটুকুই তুলুন। আমানতকারীর টাকা নিয়ে সমস্যা নেই, এ নিয়ে মাথাব্যথা আমাদের। আমানতকারীর টাকা সুরক্ষিত থাকবে। তবে একবারে একসঙ্গে সবাই টাকা উত্তোলন করতে গেলে কোনো ব্যাংকই টিকবে না।
নতুন টাকা ছাপানো নিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে টাকা সরবরাহ করেছি। এখানে টাকার ফ্লো বাজারে বাড়বে না, আবার মূল্যস্ফীতিও বাড়বে না। কারণ, আমরা এক হাতে টাকা দিচ্ছি, বন্ড ইস্যু করার মাধ্যমে সেসব টাকা অন্য হাতে তুলেও নিচ্ছি।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, মনিটরিং পলিসি আগের মতোই টাইট থাকবে। বাজারকে অস্থিতিশীল করব না। রবিবার থেকে ব্যাংকের শাখায় যাবেন, দেখবেন সব শাখায় টাকা নিতে পারছেন গ্রাহকরা। তবে সব গ্রাহক একবারে নিলে টাকা থাকবে না। আবার এটাও বলব, কেউ যেন একসঙ্গে ১০০ কোটি টাকা তুলতে না যায়।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১৩ আগস্ট আহসান এইচ মনসুরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩তম গভর্নরের দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। দায়িত্ব গ্রহণের পরই তিনি জানিয়েছিলেন, নতুন করে টাকা ছাপিয়ে আর কোনো দুর্বল ও সমস্যাযুক্ত ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে না।
তিনি জানিয়েছিলেন, আন্তঃব্যাংকের মাধ্যমে সমস্যায় থাকা ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে এবং সেখানে গ্যারান্টার হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করবে। তারল্য সংকট কাটাতে পুরো সাপোর্ট দিতে হলে দুই লাখ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। এতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে বহুগুণ।