ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

আয়কর অব্যাহতির বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাখ্যা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০২, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

আয়কর অব্যাহতির বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাখ্যা

গ্রামীণ ব্যাংক

গ্রামীণ ব্যাংকের আয়কর অব্যাহতির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, গ্রামীণ ব্যাংক সমাজের অবহেলিত ভূমিহীনদের মালিকানায় ভূমিহীন জনগোষ্ঠীর সার্বিক কল্যাণে নিয়োজিত একটি ঋণ দানকারী প্রতিষ্ঠান।

প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে ভূমিহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দেওয়া, তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তারা যেন গ্রামীণ অর্থনীতিতে একটি সুস্পষ্ট ইতিবাচক অবদান রাখতে পারেন এবং নিজেরা যাতে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন সেটিই গ্রামীণ ব্যাংকের মূল লক্ষ্য। গ্রামীণ ব্যাংক বিশেষায়িত ব্যাংক হলেও গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রম মূলত ক্ষুদ্র ঋণ কেন্দ্রিক।
বুধবার গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুর মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ব্র্যাক, আশা, টিএমএসএসসহ রেজিস্ট্রিকৃত ৭০০ এর অধিক এনজিও ক্ষুদ্র ঋণের আয়ের ওপর থেকে আয়কর অব্যাহতি পেয়ে আসছে।

শুধু তাই নয়, গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকও প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত শর্তহীনভাবে আয়কর অব্যাহতি পেয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার পুনরায় ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৯ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংককে আয়কর অব্যাহতি প্রদান করেছে। সরকারের এই কর অব্যাহতি সহায়তা গ্রামীণ ব্যাংকের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

এজন্য সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এ ছাড়া ইতোমধ্যে সরকারের দারিদ্র্য বিমোচনের কৌশলপত্র অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংকও দৃঢ়তার সঙ্গে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে। গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মসূচি সরকার কর্তৃক পরিচালিত দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক ২ হাজার ৫৬৮টি শাখার মাধ্যমে দেশের ৮১ হাজার ৬৭৮টি গ্রামে প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ ৯ হাজার সদস্যের মধ্যে এ ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এ কর্মসূচির আওতায় সদস্য পরিবারের লোকসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। গ্রামীণ ব্যাংক ১ কোটি ৬ লাখ ৯ হাজার সদস্যের মাঝে বছরে প্রায় ২৫,০০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করছে। বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ১১৬.৯৬ কোটি টাকা। সংগৃহীত আমানত দ্বারা ঋণ কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়। এ ঋণের আদায় হার ৯৬.২৯ শতাংশ।
গ্রামীণ ব্যাংক বলছে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণের লক্ষ্যেই সদাশয় সরকার একটি বিশেষ অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে সরকার ও ভূমিহীনদের মালিকানায় গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কর মওকুফের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংককে পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। সরকার গ্রামীণ ব্যাংককে শর্তহীনভাবে আয়কর অব্যাহতি প্রদান করায় ২০০৬ সাল হতে গ্রামীণ ব্যাংক তার শেয়ার মালিকগণকে (সরকার এবং ভূমিহীন সদস্য) লভ্যাংশ প্রদান করে আসছে। 
এ প্রক্রিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংক ২০০৬ সালে ১০০ শতাংশ, ২০০৭ সালে ২০ শতাংশ, ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করেছে। কর অব্যাহতির মাধ্যমে সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের বিপুলসংখ্যক দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রতিষ্ঠানের অর্জিত আয় লভ্যাংশ হিসেবে গ্রহণ করে ক্ষমতায়ন করার সুযোগ করে দিয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ব্যাংকের ভূমিহীন সদস্যগণ ৩১৬.৪১ কোটি টাকা লভ্যাংশ পেয়েছেন।

অধিকন্তু সরকারও তার বিনিয়োজিত অর্থের উপর লভ্যাংশ পাচ্ছে। যেমন-সরকার প্রত্যক্ষভাবে ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬৪.৯৩ কোটি টাকা লভ্যাংশ পেয়েছে। সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এ পর্যন্ত ১.৭১ কোটি টাকা করে মোট ৩.৪২ কোটি টাকা লভ্যাংশ পেয়েছে।

×