ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

ইন্টারনেট বন্ধে এটিএম-ক্রেডিট কার্ড লেনদেনে ধস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:২১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইন্টারনেট বন্ধে এটিএম-ক্রেডিট কার্ড লেনদেনে ধস

ইন্টারনেট বন্ধে এটিএম-ক্রেডিট কার্ড লেনদেনে ধস

দেশে জুলাই মাসজুড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলে। আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত ১৮ জুলাই ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এতে ভয়াবহ প্রভাব পড়ে ব্যাংকিং খাতে। এ ছাড়াও আন্দোলন চলাকালে হামলা-লুট হওয়ার ভয়ে বন্ধ রাখা হয় রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ এলাকার এটিএম বুথ। এতে টাকা তুলতে পারেনি গ্রাহক।

ফলে জুলাই মাসে এটিএম কার্ডে লেনদেন কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। শুধু এটিএম কার্ড লেনদেনই নয়। ব্যাপক হারে কমেছে ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনও। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাসে এটিএম, পস, সিএআরএম ও ই-কমার্সে ট্রানজেকশনে লেনদেন হয়েছে ৪০ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা। যা তার আগের মাস জুনে ছিল ৫১ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কম হয়েছে ১০ হাজার ৮১২ কোটি টাকা বা ২১ শতাংশ। এ ছাড়াও জুলাই মাসে ট্রানজেকশন হয়েছে ৪ কোটি ৩২ লাখ ১৩ হাজার, যেখানে আগের মাসে হয়েছিল ৫ কোটি ২৯ লাখ ৫৩ হাজার। লেনদেন কমেছে প্রায় ৯৭ লাখ ২৪ হাজার। 
প্রতিবেদন বলছে, জুলাই মাসে এটিএম বুথে লেনদেন হয়েছে ২৩ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। জুন মাসে লেনদেন হয়েছিল ৩১ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। লেনদেন কমেছে ৭ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। এ ছাড়াও গত জুলাই মাসে বিভিন্ন দোকান, বিপণি বিতানে পস মেশিনের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা। তার আগের মাস জুনে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা।

সে হিসাবে লেনদেন কম হয়েছে প্রায় ৪৮৫ কোটি টাকা। জুলাই মাসে লেনদেনে ভাটা পড়ে ই-কমার্সেও। কারণ ই-কমার্স খাত পুরোপুরি ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। আর ওই মাসে কয়েকদিন বন্ধ থাকে ইন্টারনেট। ওই মাসে ই-কমার্স খাতে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। তার আগের মাসে হয়েছিল ১ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। লেনদেন কম হয়েছে ২৪০ কোটি টাকা। এদিকে জুলাই মাসের আন্দোলন ও ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ব্যাপক পতন হয়েছে ক্রেডিট কার্ড লেনদেনেও।

দেশে বিদেশে সবখানেই কমেছে ক্রেডিট কার্ড লেনদেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, গত জুলাই মাসে দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা, যা জুন মাসে ছিল ২ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ডে দেশের অভ্যন্তরে লেনদেন কমেছে ৩৭৩ কোটি টাকা বা ১৪ শতাংশ। এ সময় দেশের অভ্যন্তরে বিদেশীরা খরচ করেছেন ১৩৬ কোটি টাকা। যা জুন মাসে ছিল ১৭৬ কোটি টাকা। খরচ কমেছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা।
একই সময়ে দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের মাধ্যমে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে খরচ হয়েছে ১ হাজার ১৯৬ কোটি, খুচরা দোকানে ৩১৮ কোটি, ইউটিলিটি বাবদ ২০৮ কোটি, নগদ উত্তোলন ১৭১ কোটি, কাপড় কেনায় ৮৯ কোটি, ফার্মেসিতে ১৪০ কোটি, ফান্ড স্থানান্তর ৭৬ কোটি, পরিবহনে ৭০ কোটি, বিজনেস সার্ভিস ৪২ কোটি, প্রফেশনাল সার্ভিস ১৮ কোটি ও সরকারি সেবায় ১০ কোটি টাকা।

গত জুন মাসে যার প্রত্যেকটি সূচকে খরচ বেশি ছিল। এ ছাড়াও দেশের ভেতর জুলাইয়ে ভিসা কার্ডের মাধ্যমে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা, মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে ৪১৫ কোটি, অ্যামেক্সে ২৩১ কোটিসহ আরও কয়েকটি কার্ডের মাধ্যমে বাকি টাকা ব্যয় করা হয়।

×