
ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বের বৃহত্তম কোকো উৎপাদনকারী দেশ আইভরি কোস্টের বাফিং-টোনকপি অঞ্চলের কৃষকরা সতর্ক করেছেন যে, যদি অবিলম্বে আর্থিক সহায়তা ও ন্যায্য বাজার ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে ২০৩০ সালের মধ্যে কোকো গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
দীর্ঘদিনের কম দাম ও কৃষি পুনঃবিনিয়োগের অভাবে গাছগুলো পুরাতন হয়ে পড়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ফলন আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। এর ফলে বিশ্ববাজারে কোকো ও চকলেট পণ্যের দাম বেড়েছে, কিন্তু কৃষকরা পাচ্ছেন না তার সঠিক মূল্য।
ম্যান শহরের ‘ইয়েয়াসো’ নামক একটি কৃষক সমবায় জানায়, তাদের ৫,০০০ কৃষকের উৎপাদন সাম্প্রতিক বছরে ৩০% কমে গেছে। এর ফলে অনেক কৃষক কোকোর পরিবর্তে রাবার বা পাম চাষে ঝুঁকছেন।
৩৪ বছর বয়সী ইয়েয়াসোর কৃষি প্রশিক্ষক বিয়াবাতে পোসেনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যখন বৃষ্টি দরকার তখন বৃষ্টি হয় না, আবার রোদ চাওয়ার সময় অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়। ২০৩০ সালের মধ্যে যদি কিছু না করা হয়, তাহলে কোকো গাছ থাকবে না।”
সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সমবায়গুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় নানা উদ্যোগ নিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে অ্যাগ্রোফরেস্ট্রি (গাছপালা রোপণ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা)। ইয়েয়াসো সমবায় এরই মধ্যে ১,৪০,০০০ কোকো, ফল ও ছায়া প্রদানকারী গাছ রোপণ করেছে।
তবে মূল সমস্যা আর্থিক ও কারিগরি সংস্থানের ঘাটতি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক থমাস আদেই জানান, অধিকাংশ ছোট সমবায় এই ধরনের টেকসই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্ষম নয়।
ইয়েয়াসো সম্প্রতি একটি নতুন উদ্যোগ ‘শেয়ার্ড ইমপ্যাক্ট’-এ যুক্ত হয়েছে, যা যুক্তরাজ্যের সুপারমার্কেটগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির মাধ্যমে পণ্য কেনায় উৎসাহিত করছে। এর ফলে কৃষকরা স্থায়ী আয় পাবেন এবং কৃষি উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়বে।
ইয়েয়াসোর লক্ষ্য হলো বর্তমানে ২০% ফেয়ারট্রেড শর্তে বিক্রি হওয়া কোকোকে ৪০%-এ উন্নীত করা, যাতে তারা আরও বেশি প্রিমিয়াম আয় করে সামাজিক ও পরিবেশগত প্রকল্পে তা ব্যয় করতে পারে।
ইয়েয়াসোর বোর্ডের সভাপতি দৌম্বিয়া আবু জেইদ বলেন, “স্বল্পমেয়াদী চুক্তি হলে কৃষকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। তারা তখন কোকো ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হন।”
আঁখি