
ছবি: সংগৃহীত
প্রাকৃতিক পরিবেশের বৈচিত্র্যের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বিভিন্ন প্রাণী অবিশ্বাস্যভাবে নিজেদের জীবনধারায় পরিবর্তন এনেছে। পৃথিবীতে এমন কিছু প্রাণী রয়েছে, যারা দীর্ঘ সময়—এক মাস বা তারও বেশি সময়—পানি ছাড়া বেঁচে থাকতে পারে। চলুন, পরিচিত হই সেই চমকপ্রদ ৮টি প্রাণীর সঙ্গে।
১. উট (Camel)
মরুভূমির ‘জীবন্ত জাহাজ’ নামে পরিচিত উটের কুঁজে চর্বি জমা থাকে, যা শক্তি ও পানির বিকল্প উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। উট কয়েক সপ্তাহ থেকে এক মাস পর্যন্ত পানি না পান করেও দেহের ভেতর থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি ও পানি সংগ্রহ করে বেঁচে থাকতে পারে।
২. ক্যাঙ্গারু ইঁদুর (Kangaroo Rat)
আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বসবাসকারী এই ছোট্ট প্রাণীটি প্রাকৃতিকভাবে এমনভাবে অভিযোজিত যে, জীবনভর সরাসরি পানি পান না করেও টিকে থাকতে পারে। ক্যাঙ্গারু ইঁদুর তাদের খাদ্য (বিশেষত বীজ) থেকে প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করে এবং অত্যন্ত কম পানি হারায়।
৩. কাঁটাযুক্ত শয়তান (Thorny Devil)
অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে পাওয়া যায় এই ছোট্ট সরীসৃপ। এর শরীরের গঠন এমন যে শিশির বা বৃষ্টির ফোঁটা তার শরীরে জমা হয়ে বিশেষ নালীপথে মুখে পৌঁছে যায়। ফলে পানির সরাসরি প্রয়োজন না হলেও সে সহজেই তৃষ্ণা মেটাতে পারে।
৪. মরুভূমির কাছিম (Desert Tortoise)
মরুভূমির এই কাছিম পানি শরীরে ধরে রাখার বিশেষ ক্ষমতা রাখে। তারা দীর্ঘদিন পর্যন্ত শরীরের ভেতরে জমা পানি ব্যবহার করে বেঁচে থাকতে পারে। এমনকি কোনো কোনো সময় কয়েক মাস পর্যন্ত পানি পান না করেও বেঁচে থাকতে দেখা গেছে।
৫. আফ্রিকান ফুসফুসবিশিষ্ট মাছ (African Lungfish)
আফ্রিকান লুংফিশ তার দেহে পানি ধরে রাখার জন্য কাদা-মাটির মধ্যে বিশেষ এক প্রক্রিয়ায় শীতনিদ্রার মতো স্থিতিশীল হয়ে পড়ে। শুকনো মৌসুমে এটি পানি ছাড়াই কয়েক মাস এমনকি বছরের পর বছর টিকে থাকতে পারে।
৬. গিলা মনস্টার (Gila Monster)
উত্তর আমেরিকার এই বিষধর সরীসৃপ শরীরে চর্বি জমা করে রাখে, যা পরে পানি ও শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। খাবার ও পানি ছাড়াও গিলা মনস্টার দীর্ঘদিন টিকে থাকতে পারে এবং এক মাসেরও বেশি সময় পানির প্রয়োজন হয় না।
৭. বালুকামৃগ (Sand Gazelle)
বালুকামৃগ মরুভূমির প্রতিকূল পরিবেশে এমনভাবে নিজেদের অভিযোজিত করেছে যে তারা পানি কম পেলেও স্বাভাবিকভাবে রক্তচাপ বজায় রাখতে পারে। ফলে পানি সংকটেও তারা প্রাণবন্ত থাকতে সক্ষম হয়।
৮. কোয়ালা (Koala)
অস্ট্রেলিয়ার এই জনপ্রিয় প্রাণী কোয়ালা ইউক্যালিপ্টাস গাছের পাতা থেকে প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করে। সাধারণত কোয়ালাকে পানি পান করতে দেখা যায় না। পাতার রসই তার পানির চাহিদা মেটায়, ফলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আলাদাভাবে পানি পান না করেও টিকে থাকতে পারে।
এসএফ