ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

মায়ের দেয়া ৫০০ টাকায় শুরু, এখন লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক তপু!

প্রকাশিত: ১৯:৫১, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

মায়ের দেয়া ৫০০ টাকায় শুরু, এখন লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক তপু!

ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার তরুণ উদ্যোক্তা তপু যেন বাস্তবের এক অনুপ্রেরণার গল্প। অষ্টম শ্রেণির পর অভাবের তাড়নায় লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হওয়া এই যুবক আজ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালিক। তার সাফল্যের যাত্রা শুরু হয়েছিল মাত্র ৫০০ টাকা দিয়ে— যা তাকে দিয়েছিলেন তার মা।

একসময় দোকানে দোকানে বাদাম ও ঝোলা ভেজে বিক্রি করতেন তপু। তখন তার পুঁজি ছিল মাত্র ৫০০ টাকা। সেখান থেকেই শুরু। সেই টাকায় বাজার থেকে বাদাম, বুট, পান, বিড়ি কিনে এনে নিজের হাতে প্যাকেট করে বিক্রি করতেন। কিছুদিন পর একটি ছোট দোকান ভাড়া নিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। এরপর ধীরে ধীরে মুরগির ব্যবসা, ছাগল পালন, মাছ চাষ এবং অবশেষে ফুলের চাষেও নাম লেখান তিনি।

বর্তমানে তপুর রয়েছে চারটি দোকান, দেড় একর জমিতে ফুলের চাষ, একটি ছাগলের খামার (যেখানে আছে ২২টি ছাগল) এবং পুকুরভর্তি মাছ। তার কর্মচারীর সংখ্যা এখন পাঁচজন। নিজেকে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি তপু এখন কাজ করছেন এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে। তার মতে, বিদেশে গিয়ে চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ না করে দেশে এক-দেড় লাখ টাকা বিনিয়োগ করেই লাভজনক ব্যবসা করা সম্ভব।

তপুর এই সাফল্যে খুশি তার মা ও স্ত্রী। প্রতিদিনের কাজে তাকে সহযোগিতা করেন তারা। স্ত্রী বলেন, "আমি অনেক খুশি আমার স্বামীর এই সাফল্য দেখে। ফুল লাগানো থেকে শুরু করে অর্ডার অনুযায়ী ফুল তুলে দেওয়া, সবকিছুতেই আমি সাহায্য করি।"

তপুকে ২০১৪ সাল থেকে নানা ভাবে সহায়তা করে আসছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। রাজবাড়ী বালিয়াকান্দির যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক জানান, তপুকে মাছ ও ফুল চাষসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উদ্যোক্তা ঋণের আওতায় এনে তাকে দুইবার প্রায় দুই লক্ষ টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে তাকে সর্বোচ্চ পাঁচ লক্ষ টাকার সহজ ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।

তপুর এই গল্প নিছক একটি সাফল্যের গল্প নয়— এটি মায়ের আশীর্বাদ, কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ় মানসিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/dsNDomcanRU?si=2-4NeT6SWfFzC_dB

এম.কে.

×