ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

শাহজাহান থেকে জাহাঙ্গীর, বাবর, মুঘলদের বরফ সংগ্রহের রহস্য

প্রকাশিত: ১৩:২১, ২২ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৩:২২, ২২ এপ্রিল ২০২৫

শাহজাহান থেকে জাহাঙ্গীর, বাবর, মুঘলদের বরফ সংগ্রহের রহস্য

ছবি : সংগৃহীত

মুঘল সম্রাটরা গ্রীষ্মকালে বরফ ব্যবহার করতেন বিভিন্ন কাজে, বিশেষ করে শরবত ও অন্যান্য পানীয় ঠান্ডা করার জন্য। সেই সময়ে প্রাকৃতিকভাবে বরফ পাওয়া যেত শীতকালে বা উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে। বরফ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য মুঘলরা বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতেন।  

 

 

হিমালয় বা কাশ্মীরের মতো ঠান্ডা অঞ্চল থেকে শীতকালে বরফ কেটে আনা হত। স্থানীয় লোকেরা বরফ সংগ্রহ করে বিশেষভাবে সংরক্ষণ করত, যা পরে মুঘল দরবারে পাঠানো হত। বরফ সংরক্ষণের জন্য পারস্য ও মধ্য এশিয়ার ইয়াখচাল পদ্ধতি ব্যবহার করা হত। এই গম্বুজাকার কাঠামোর দেয়াল পুরু ও তাপনিরোধক উপাদান দিয়ে তৈরি করা হত, যাতে বাইরের গরম বাতাস ভিতরে প্রবেশ না করতে পারে। অনেক সময় ভূগর্ভস্থ স্থানও ব্যবহার করা হত, কারণ মাটির নিচে তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।  বরফ সংগ্রহ এর জন্য প্রচলিত ছিল বিশেষ রাস্তা, যা যমুনা নদীর মাধ্যমে দিল্লিতে আনা হতো ।

 

কিছু অঞ্চলে শীতকালে রাতের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেলে পানিকে পাতলা স্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হত। সকালে তা জমে গেলে বরফ সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হত। এই পদ্ধতি বিশেষ করে কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের কিছু এলাকায় চালু ছিল। দূরবর্তী স্থান থেকে বরফ আনার জন্য দ্রুতগামী ঘোড়া বা উটের ব্যবস্থা করা হত। বরফকে ঘাস, খড় বা কাপড়ে মুড়ে রাখা হত যাতে তা দ্রুত গলে না যায়।  

 

 

মুঘল সম্রাটদের বিলাসবহুল জীবনের অংশ ছিল এই বরফের ব্যবহার। আকবরের সময় থেকে এই ব্যবস্থা শুরু হয় এবং শাহজাহানের আমলে তা আরও উন্নত হয়। তারা বরফ দিয়ে ফালুদা, শরবত ও বিভিন্ন ঠান্ডা পানীয় তৈরি করতেন, যা মুঘল রাজসিক সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল।

আঁখি

×