
কর্মক্ষেত্রে একজন কর্মীর সফলতার পেছনে নানা ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন হয়। কাজের দক্ষতা, সময় ব্যবস্থাপনা, দলবদ্ধভাবে কাজ করার ক্ষমতা এসব কিছুর পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো বসের সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক বজায় রাখা। একজন বস কেবল কর্তৃত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নন, বরং কর্মীর কাজের গতি মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যৎ উন্নতির পথপ্রদর্শকও। সুতরাং তাঁর সঙ্গে একটি সুস্থ, সম্মানজনক এবং পেশাদার সম্পর্ক গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। কিভাবে কর্মক্ষেত্রে বসের সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়, সেই বিষয়টি তুলে ধরেছেন পূবালী ব্যাংকের ডেপুটি জুনিয়র অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস নাসরিন
স্পষ্ট ও সম্মানজনক যোগাযোগ: বসের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার প্রথম শর্ত হলো, স্পষ্ট যোগাযোগ। কোনো ভুল বোঝাবুঝি যাতে না হয় সেজন্য সময়মতো তথ্য দেওয়া, প্রশ্ন করা এবং আপডেট জানানো। অহেতুক অনুমান বা গুজবের ওপর ভিত্তি করে কিছু না বলা উচিত। সম্মান দেখিয়ে কথা বলা, ইমেইল বা মেসেজে পেশাগত শব্দ ব্যবহার করাও অত্যন্ত জরুরি ।
কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতা: আপনার বসের সঙ্গে পেশাদার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হলে, প্রমাণ করতে হবে আপনি আপনার দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন এবং নিষ্ঠাবান। সময়মতো কাজ জমা দিলে এবং নিজের কাজের প্রতি আন্তরিকতা প্রদর্শন করলে বসের আস্থা অর্জন করা সম্ভব হয়। বস যদি বুঝতে পারেন তার অধীনে থাকা কর্মী দায়িত্ব নিতে সদা প্রস্তুত থাকেন, তবে উক্ত কর্মী এবং বসের মধ্যকার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়।
সীমা বজায় রাখা: কর্মক্ষেত্রে পেশাদার সম্পর্ক বজায় রাখতে গিয়ে অনেক সময় সীমারেখা হারিয়ে যায়। বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ভালো, কিন্তু অতিরিক্ত ব্যক্তিগত হওয়া কিংবা বসের ব্যক্তিগত বিষয়ে মন্তব্য করা কখনোই পেশাদার আচরণ নয়। বস যদি অনানুষ্ঠানিক পরিবেশেও কথা বলেন, তবুও নিজেকে সামলে চলা এবং পরিমিত আচরণ করা জরুরি।
মতবিরোধের সময় শালীনতা: সবসময়ই বসের সঙ্গে হয়তোবা একমত হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু মতবিরোধ প্রকাশের ধরনটাই নির্ধারণ করে সম্পর্ক টিকবে কি না। সংযত ভাষা, যুক্তিভিত্তিক ব্যাখ্যা এবং সমাধানমূলক দৃষ্টিভঙ্গি বসকে বোঝায় আপনি পেশাদার এবং সমস্যার সমাধান চান। বসের সঙ্গে কখনোই ব্যক্তিগত আক্রমণ বা অভিযোগের ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়।
প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ : কাজের ক্ষেত্রে বস যখন কোনো সহযোগিতা করেন, প্রশংসা করেন, কিংবা কোনো সুযোগ করে দেন- তখন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা একটি ভদ্রতা এবং সম্পর্ক গড়ার একটি ভালো উপায়। তবে তা যেন চাটুকারিতা না হয়ে যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বসের সঙ্গে একটি পেশাদার সম্পর্ক গড়ে তোলা সময়সাপেক্ষ বিষয় হলেও, একজন কর্মীর ক্যারিয়ারের জন্য এটি অত্যন্ত মূল্যবান। সম্মান, দায়িত্বশীলতা, এবং যোগাযোগ দক্ষতা থাকলে এই সম্পর্ক শুধু ভালোই হয় না, বরং কর্মক্ষেত্রের সামগ্রিক পরিবেশও হয়ে ওঠে ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ।
প্যানেল