ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

আলিয়ঁসে বাংলা ক্যালিগ্রাফি  প্রদর্শনী ‘দলিলে  দৃশ্যপট’

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:২৯, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

আলিয়ঁসে বাংলা ক্যালিগ্রাফি  প্রদর্শনী ‘দলিলে  দৃশ্যপট’

.

শিল্পের বহুমাত্রিকতার সন্ধানী এক শিল্পী আরহাম-উল-হক চৌধুরী। সেই সুবাদে তিনি একাধারে চিত্রকর, ক্যালিগ্রাফার, ভাস্কর ও গবেষক। তিন দশকেরও  বেশি সময় ধরে তার সৃজনধর্মী কর্মকা-ে প্রতিফলিত হয়েছে সংস্কৃতি, ভাষা ও পরিবেশের প্রতি গভীর সংযোগ। নৃবিজ্ঞান বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এই শিল্পী বাংলা ক্যালিগ্রাফি, ধাতব ভাস্কর্য, প্রাকৃতিক রঙের বাটিক ও নকশানির্ভর শিল্পকর্মের জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত। শিল্পরসিকদের কাছে সমাদৃত হয়েছে তার কাজ। এবার তিনি আরবি বর্ণমালার আশ্রিত প্রাচীন দলিলের ওপর বাংলা ক্যালিগ্রাফি নিয়ে ভিন্নধর্মী কিছু কাজ করেছেন। সেসব চিত্রকর্ম নিয়ে ফরাসি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে চলছে প্রদর্শনী। শিল্পীর কুড়িতম এই একক শিল্পায়োজনটির শিরোনাম ডেকোরেটেড ডিডস বা দলিলে দৃশ্যপট। বাংলা নববর্ষ উদ্্যাপন এবং শিল্পীর সঙ্গে আলিয়ঁসের সম্পর্কের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। 
এই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে ৩১টি বাংলা ক্যালিগ্রাফি চিত্রকর্ম, যা রচিত হয়েছে দুর্লভ প্রাচীন দলিলের ওপর।  সেই 
প্রেক্ষাপটে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও ঔপনিবেশিক আমলের কয়েকটি  দলিলও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এই প্রদর্শনীতে। এখানে প্রাচীন বাংলার প্রবাদ-প্রবচন ও ভাষার শৈল্পিক রূপ দলিলের ইতিহাসের সঙ্গে মিলিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা ভাষা ও স্মৃতিকে একসূত্রে গেঁথে রাখে। তেমনই এক চিত্রকর্মে দলিলের  লেখালেখির ওপর ভেসে উঠেছে রয়েল তেজোদীপ্ত এক বেঙ্গল টাইগারের অবয়ব। একই কৌশলে চিত্রিত কলের পুতুল শীর্ষক চিত্রকর্মে উদ্ভাসিত হয়েছে রঙ্গিলা পাপেটের পথচলার দৃশ্যকল্প। নদীমাতৃক বাংলাদেশের চিরচেনা জাল গুটানোর দৃশ্য চমৎকারভাবে মূর্ত হয়েছে আরেকটি ছবিতে।    
আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। সোম থেকে শনিবার বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই শিল্পায়োজন। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ।
অধ্যাপক মোসলেম আলী স্মরণ ॥ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক  মোসলেম আলীকে স্মরণ করা হলো বুধবার। জাদুঘরের আয়োজনে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘শিক্ষা ও সংস্কৃতির অগ্রগতিতে অধ্যাপক মোসলেম আলী’ শীর্ষক  সেমিনার ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাদুঘরের প্রদর্শক প্রভাষক সোহেল মাসুদ। আলোচনা করেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শাহজাহান আলী এবং নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাফিজার রহমান। সভাপতিত্ব করেন জাদুঘরের সচিব মো. সাইফুল ইসলাম। 
সোহেল মাসুদ তার প্রবন্ধে বলেন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোসলেম আলী দেশের শিক্ষাখাতে অনন্য অবদান রেখেছেন। বর্ণিল কর্মজীবনে তিনি একাধারে সাতটি কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। 
পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক পদে নিযুক্ত হন। এভাবেই তিনি  বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে আপন প্রতিভা ও প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে সক্ষম হন। তার দীর্ঘ জীবনের কর্মদক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের গণমানুষের উন্নয়নের জন্য ও মানুষের আত্মিক বিকাশের জন্য নিবেদন করেছিলেন। তাই কর্মের মাধ্যমেই তিনি সকলের মাঝে বেঁচে আছেন ও বেঁচে থাকবেন চিরকাল।

প্যানেল

×