ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

৯০ ফুট পানির নিচে পিরামিড, মিশরের পিরামিডেরও আগের, ইতিহাস নতুনভাবে লেখার দাবি বিজ্ঞানীদের

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ১১ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২৩:২৬, ১১ এপ্রিল ২০২৫

৯০ ফুট পানির নিচে পিরামিড, মিশরের পিরামিডেরও আগের, ইতিহাস নতুনভাবে লেখার দাবি বিজ্ঞানীদের

ছবিঃ সংগৃহীত

জাপানের একদম দক্ষিণে, রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জের কাছে সমুদ্রের নীল জলে লুকিয়ে আছে এক বিশাল পাথরের গঠন — ৯০ ফুট উঁচু, যেন বিশাল এক প্রাচীন মন্দির!

পানির ৮২ ফুট নিচে থাকা এই গঠন, যেটি “ইয়োনাগুনি মনুমেন্ট” নামে পরিচিত, প্রথম নজরে আসে ১৯৮৬ সালে। তখন থেকেই বিজ্ঞানীদের মধ্যে শুরু হয় তর্ক — এটা কি প্রকৃতির খেলা, নাকি হাজার বছর পুরনো হারিয়ে যাওয়া এক সভ্যতার নিদর্শন?

প্রকৃতি না প্রাচীন মানুষ?

গঠনটা দেখলে মনে হয় কেউ যেন ইচ্ছা করে কেটে তৈরি করেছে সিঁড়ি, মঞ্চ আর চওড়া প্রান্ত। এতটাই নিখুঁত! আর গবেষকরা বলছেন, এটি ১০,০০০ বছরেরও বেশি পুরনো হতে পারে — যদি সত্যি হয়, তাহলে এই গঠন হবে মিশরের পিরামিড বা স্টোনহেঞ্জের চেয়েও প্রাচীন। এমনকি কেউ কেউ তো এটিকে সবচেয়ে পুরনো মানব নির্মিত স্থাপনা বলেই ভাবছেন।

এক হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার ছায়া?

অনেক গবেষক মনে করেন, ইয়োনাগুনি হতে পারে এমন এক সভ্যতার চিহ্ন, যারা কৃষিকাজ আবিষ্কারের আগেই স্থাপত্য গড়ে তুলেছিল। এমন ইতিহাস থাকলে তো আমাদের মানবজাতির টাইমলাইনই পাল্টে যাবে! কিন্তু সবাই যে একমত তা নয়।

পডকাস্টে তর্ক: বিজ্ঞান বনাম বিশ্বাস

‘জো রোগান এক্সপেরিয়েন্স’-এ লেখক গ্রাহাম হ্যানকক ও প্রত্নতত্ত্ববিদ ফ্লিন্ট ডিবল এ নিয়ে মুখোমুখি হন।

ডিবল বলেন, “এই গঠনটা আমার চোখে পুরোপুরি প্রাকৃতিক।”
আর হ্যানককের বক্তব্য, “আমি তো বরং স্পষ্ট দেখতে পাই মানুষের খোদাই করা সিঁড়ি, পাথরের খিলান, এমনকি মানুষের মুখের মতো চিহ্নও!”

আরও দৃষ্টিভঙ্গি

জাপানি ভূতত্ত্ববিদ মাসআকি কিমুরা বিশ্বাস করেন, এটা হয়তো হারিয়ে যাওয়া ‘লেমুরিয়া মহাদেশ’-এর অংশ। তাঁর মতে, হাজার হাজার বছর আগে যখন সমুদ্রপৃষ্ঠ ছিল নিচে, তখন মানুষ এই গঠন বানিয়েছিল।

অন্যদিকে, অধ্যাপক রবার্ট স্কচ বলছেন, “এই ধরনের পাথর এমনিতেই ভাঙে সরল রেখায়, বিশেষ করে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায়।”

তবুও যারা বিশ্বাস করেন এটি মানুষের কাজ, তারা একে তুলনা করছেন তুরস্কের গোবেকলি তেপে-র সঙ্গে — যা বর্তমানে প্রাচীনতম মানব নির্মিত স্থাপনা হিসেবে পরিচিত।

এখনও কিছুই নিশ্চিত নয়

এই গঠন কি সত্যিই কোনো প্রাচীন সভ্যতার শহর, যা এখন পানির নিচে ঘুমিয়ে আছে? নাকি প্রকৃতি আপন খেয়ালে এমন এক শিল্প সৃষ্টি করেছে?

এই রহস্যের জবাব এখনও অজানা।
আর সেই উত্তর খুঁজতে এখনও চলছে ডাইভ, একটার পর একটা…

আপনি কী ভাবছেন?
এটা কি প্রকৃতির খেলা, না কি হারিয়ে যাওয়া কোনো সভ্যতার নিঃশব্দ চিহ্ন?

তথ্যসূত্রঃ https://nypost.com/2025/04/08/science/underwater-pyramid-could-predate-egyptian-landmarks-scientists-say/

মারিয়া

×