
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার পৌর শহরের বাইপাস এলাকায় অবস্থিত নারায়নপুর গ্রাম। এই গ্রামে রয়েছে একটি প্রাচীন তেঁতুল গাছ। শতবর্ষী তেঁতুল গাছটি দূর থেকে আসা-যাওয়ার পথে সবার নজর কাড়ে। গাছটির বিশালতা রয়েছে দেখার মতো।
গাছটি ঘিরে রয়েছে নানান কল্পকাহিনীও। তবে গাছটির বয়স নিয়ে স্থানীয়দের নানা মত রয়েছে। কেউ বলেছেন গাছটির বয়স ২শ বছর কেউ বলেছেন আড়াইশ আর কেউ বলেছেন ৩শর কাছাকাছি হবে। এই তেঁতুল গাছটির শাখা-প্রশাখা শিকড়- বাকড়ে ছেয়ে আছে বেশ জায়গা জুড়ে। বিশাল গাছটির গায়ে অনেকটাই যেন বার্ধক্যের ছাপ লেগেছে। বর্তমানে গাছটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
এই গাছটির নিচে রয়েছে একজন প্রখ্যাত আউলিয়ার মাজার শরীফ। জনশ্রুতি রয়েছে এক সময় এই গাছের নিচে পীর, ফকির ও সন্ন্যাসীরা নিয়মিত বসতো। অনেক সময় তারা এখানে রাত্রিও যাপন করতো। কেউ এই গাছের ডালপালা কাটলে জ্বর হতো। এই ভয়ে কেউ গাছটির ডালপালা কাটতে যেত না। সে ভয় আজও রয়েছে এখনো কেউ গাছের ডালপালা কাটেনা। এই গাছটির সংলগ্ন রয়েছে হযরত আজম শাহ (রহ) এর মাজার শরীফ। রয়েছে ১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর খাতে বর্বর হামলায় শহীদ হওয়া লোকদের গণ গবর।
তবে লোকমুখে শোনা যায়, এই আউলিয়ার মাজারটি ১৪০তম বছর হলেও। গাছটি আরো শত বছর আগের। গাছটির নিচে মাজার হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভক্ত আশেকানরা এখানে এসে মিলাদ, জিয়ারত ও দোয়া করছেন। প্রতিবছর (১০ই) পৌষ এখানে বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হয়। প্রবীণরা জানান, এ তেঁতুল গাছের ডাল পালা কাটলে শরীরে জ্বর হতো। তাছাড়া এই গাছটি নিয়ে অনেক অলৌকিক ঘটনা রয়েছে। যা আমরা পূর্ব পুরুষদের মুখে শুনেছি। তবে ঐতিহ্যের অংশ হচ্ছে এই তেঁতুল গাছটি।
আখাউড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিল মোঃ মনতাজ মিয়া জানান,আমি ছোট থেকে এ তেঁতুল গাছটি যেমন দেখছি আজও তেমন দেখছি। আমার বাপ, চাচার কাছ থেকে শুনেছি গাছটির বয়স কম করে হলেও ২শ বছরের মত হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাজী আবুল কালাম বলেন, তেঁতুল গাছটি অতি প্রচীনন একটি গাছ। আমার এই বয়সে দেখিনি কেউ এই গাছের ডাল পালা কাটতে।তবে এই তেঁতুল গাছের ডাল কাটলে খবর আছে। আমার বংশের এক লোক এই গাছের ডাল কেটেছিল। তখন তার জ্বর এসেছিল। এই ভয়ে কেউ আর গাছের ডাল কাটে না।
স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলা যুবদলের সভাপতি মো: জাকির হোসেন জানান, আমার বাপ, দাদার কাছে শুনেছি এই তেঁতুল গাছটির বয়স আড়াইশো বছরের বেশি হবে। সেসঙ্গে তাদের মুখে এই তেঁতুল গাছটির নানা গল্প শুনেছি। আসলে এত বড় গাছ সহসা দেখা যায় না। এই প্রাচীন গাছটির সংলগ্ন রয়েছে মাজার ও গণকবর। মাজার কেন্দ্র করে মানুষের পদচারণা থাকলেও গাছের অনিষ্ট কেউ করে না।
মুমু