
ছবি: সংগৃহীত।
ক্যারিবিয়ান দেশ হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে সন্তান হারানো এক গ্যাং নেতার উন্মত্ত প্রতিশোধপরায়ণতায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৮০ জন বয়স্ক মানুষ। নিহতদের বেশিরভাগেরই বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং সকলেই প্রাণ হারিয়েছেন ধারালো অস্ত্রের আঘাতে। এরপর মরদেহগুলো আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
এই ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞের সূত্রপাত ঘটে, যখন ওই গ্যাং নেতা তার অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসায় কোনো সমাধান না পেয়ে এক তান্ত্রিকের শরণাপন্ন হন। তান্ত্রিক জানান, তার সন্তানের অসুস্থতার পেছনে দায়ী কালো জাদু—যা নাকি করেছেন কোনো বয়স্ক ব্যক্তি। এরপর থেকেই সেই ‘ডাইনি’ বা জাদুকরের সন্ধানে প্রবীণদের উপর দমন-পীড়ন শুরু করে গ্যাংটি।
দুদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চালানো হয় এই হামলা। শহরজুড়ে ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। একজন শহরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আপনার সন্তান অসুস্থ মানেই আপনি প্রবীণদের ডাইনি বলে কুপিয়ে মারবেন—এটা কোন সভ্যতা?”
এই গণহত্যার পর নড়েচড়ে বসেছে হাইতি প্রশাসন। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই কাণ্ডের মাধ্যমে গ্যাং নেতা মিকানো ফেলিক্স ও তার দল সহিংসতার সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু সরকার বা পুলিশ এখনও তাকে থামাতে ব্যর্থ।
এমন ঘটনায় জাতিসংঘ পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, ২০২১ সালে হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোইস হত্যার পর থেকেই দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে ওঠে এবং গ্যাং সহিংসতা মারাত্মক রূপ ধারণ করে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই দেশটিতে গ্যাং হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫০০০-এর বেশি মানুষ।
নুসরাত