ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

প্রযুক্তির লড়াইয়ে টাইপরাইটার টাইপিস্ট অবলুপ্ত!

শরিফুল রোমান, মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ১০:২৭, ৯ এপ্রিল ২০২৫

প্রযুক্তির লড়াইয়ে টাইপরাইটার টাইপিস্ট অবলুপ্ত!

ছবি: সংগৃহীত

প্রযুক্তির লড়াইয়ে আরও একটি পেশা অবলুপ্ত। সেটি হচ্ছে টাইপরাইটার টাইপিস্ট। দু’দশক আগেও টাইপরাইটারের ভালো রমরমা ছিল বাজারে

টাইপ রাইটার বা টাইপ মেশিন একটি যন্ত্র যার সাহায্যে বোতাম টিপে কাগজে লেখা যায়। প্রথম উদ্ভাবিত টাইপ রাইটারে বিদ্যুতের ব্যবহার ছিলনা। পরবর্তীতে বৈদ্যুতিক টাইপ রাইটার আবিষ্কৃত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন যন্ত্রপ্রকৌশলী ক্রিস্টোফার শোলস্‌ ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম আধুনিক ধাঁচের টাইপ রাইটার নির্মাণ করেন। ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে রেমিংটন রান্ড কোম্পানি সাধারণ মানুষের জন্য শোলস্‌ অ্যান্ড গ্লিডেনস্‌ ব্র্যান্ডের প্রথম টাইপরাইটার বাজারজাত করে।  

এক সময় অফিসে, অফিসার বা যেকোনো উচ্চপদস্থ কর্মী ডিক্টেশন দিচ্ছেন আর একজন  খটাখট করে টাইপরাইটারে তা টাইপ করে ফেলছেন, এটা ছিল খুব সাধারণ একটা ঘটনা। পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ব্যক্তিগত সচিব রাখার সময়ে প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই করে নেওয়ার অন্যতম পরীক্ষাই ছিল টাইপিংয়ের স্পিড-টেস্ট। যিনি যত কম সময়ে যত তাড়াতাড়ি টাইপ করতে পারবেন, তিনি তত বেশি যোগ্য। এই ধরনের ডিক্টেশন শুনে হাই-স্পিড টাইপিংকে বলা হয় ‘শর্টহ্যান্ড টাইপিং’।

অ্যাসিস্ট্যান্ট ছাড়া অন্যান্য পেশাও হত টাইপিংয়ের, যেরকম চাকরির আবেদনপত্র লিখে দেওয়ার কাজ, অডিও টাইপিং, কপি টাইপিং, ডেটা এন্ট্রি ক্লার্কের কাজ, যুদ্ধের সময় নিহতদের পরিবারকে চিঠি লেখার কাজেও প্রচুর সংখ্যক টাইপিস্ট নিয়োগ করা হত।

টাইপরাইটারে লেখা একেবারে কাগজেই ছাপা হয়ে যেত। কাগজটিকে আগে স্ট্যান্ডে আটকে নিতে হত, তারপর যত লাইন সরত, তত কাগজও সরে সরে যেত, সেকারণে পরের লাইনে যাওয়ার আগে কাগজকে আবার ঠিক পজিশনে নিয়ে আসতে হত। এতটাই জনপ্রিয় ছিল এই টাইপিং যে, স্কুলপাশের পর ছাত্রছাত্রীদের একরকম বাধ্যতামূলক ছিল শর্টহ্যান্ড টাইপিং শেখা।

কিন্তু কম্পিউটারের আপগ্রেডেশন, ডেস্কটপের পর ল্যাপটপ, তারপর ট্যাবলেট, কিবোর্ড টাইপিংই হয়ে উঠল টাইপরাইটার টাইপিংয়ের প্রধান অন্তরায়।

মায়মুনা

×