
ছবি: সংগৃহীত
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক প্রবীণ ব্যক্তিই দৈনন্দিন কাজে সহায়তার প্রয়োজন অনুভব করেন। কেউ কেউ সাহায্য চাইতে পারেন, আবার অনেকে নিজেদের দুর্বলতা স্বীকার করতে চান না। যদি দেখেন যে আপনার বাবা-মা ব্যক্তিগত পরিচর্যা, গৃহস্থালির কাজ, স্বাস্থ্য সমস্যা বা শারীরিক সক্ষমতায় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তাহলে তাদের জন্য যত্নের ব্যবস্থা করা জরুরি হয়ে উঠতে পারে।
প্রবীণ বাবা-মায়ের যত্ন নেওয়ার ১০টি ধাপ
১. তাদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলুন
আপনার বাবা-মায়ের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করুন। বিষয়টি সংবেদনশীল হতে পারে, তাই ধৈর্য ও সহমর্মিতা বজায় রেখে কথা বলুন। পরিবর্তনের ব্যাপারে ধীরে ধীরে তাদের মানসিক প্রস্তুতি নিতে দিন।
২. তাদের ইচ্ছা বুঝুন
যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে আপনার বাবা-মায়ের মতামতকে গুরুত্ব দিন। তাদের চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিলে তারা আরও স্বস্তিবোধ করবেন।
৩. তাদের প্রয়োজন মূল্যায়ন করুন
বুঝতে চেষ্টা করুন, তারা ঠিক কী ধরনের সহায়তা চান—গৃহস্থালির কাজ, ব্যক্তিগত পরিচর্যা, হাঁটাচলা, নাকি দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা ব্যবস্থাপনার জন্য সহায়তা প্রয়োজন?
৪. আপনার সক্ষমতা যাচাই করুন
আপনার কাজ, পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব সামলাতে পারবেন কিনা তা বিবেচনা করুন। অতিরিক্ত দায়িত্ব নেওয়ার ফলে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি (burnout) তৈরি হতে পারে, যা কারও জন্যই ভালো নয়।
৫. পেশাদার সহায়তা প্রয়োজন কিনা বিবেচনা করুন
আপনি যদি ব্যক্তিগতভাবে পর্যাপ্ত সময় দিতে না পারেন, তবে বন্ধু, আত্মীয় বা পেশাদার কেয়ারগিভারের সহায়তা নিতে পারেন।
৬. প্রবীণদের জন্য উপযুক্ত যত্নের ব্যবস্থা খুঁজুন
অনেক প্রবীণ ব্যক্তি নিজেদের বাড়িতে থাকতে চান। তাদের জন্য গৃহ-সহায়ক সেবা, যেমন ব্যক্তিগত পরিচর্যা সহকারী বা হোম হেলথ এইড একটি ভালো সমাধান হতে পারে। অন্যদিকে, কেউ হয়তো বৃদ্ধাশ্রম বা সহায়ক বাসস্থান পছন্দ করবেন।
৭. উপযুক্ত সেবা প্রদানকারী নির্বাচন করুন
যদি বাবা-মা বাড়িতেই থাকতে চান, তাহলে স্থানীয়ভাবে স্বীকৃত হোম কেয়ার সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন করুন। আর যদি তারা বৃদ্ধাশ্রমে যেতে রাজি হন, তাহলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখে উপযুক্ত পরিবেশ বেছে নিন।
৮. আর্থিক সামর্থ্য পর্যালোচনা করুন
আপনার বাবা-মা যত্নের খরচ সামলাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন। কেউ হয়তো ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে ব্যয় বহন করতে পারবেন, আবার কারও জন্য সরকারী বা বেসরকারি সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে।
৯. অর্থায়নের সুযোগ খতিয়ে দেখুন
আপনার বাবা-মায়ের আর্থিক অবস্থা ও যত্নের প্রয়োজন অনুসারে Medicare, Medicaid, বা ব্যক্তিগত বীমা থেকে সহায়তা পাওয়া সম্ভব কিনা তা গবেষণা করুন।
১০. যত্নের ব্যবস্থা ও পর্যবেক্ষণ করুন
যত্নের জন্য উপযুক্ত পরিকল্পনা চূড়ান্ত হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পন্ন করুন ও সেবা চালু করুন। তাদের যত্ন ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত খোঁজ নিন।
বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মায়ের যত্ন নেওয়া কঠিন মনে হতে পারে, তবে সঠিক পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তাদের জন্য আরামদায়ক ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করা সম্ভব।
সূত্র: https://www.archcare.org/10-steps-to-take-when-your-parents-can-no-longer-care-for-themselves/
আবীর