ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১

শিশুদের ঈদ আনন্দ

সালমা আহমেদ

প্রকাশিত: ১৯:০১, ২৩ মার্চ ২০২৫

শিশুদের ঈদ আনন্দ

ঈদের ঘন্টা বাজতে শুরু করেছে। ছোট-বড় সবাই সেই আনন্দে ভাসছে। ঈদ উৎসবে মূলত শিশু-কিশোরেরাই বেশি আনন্দে মেতে ওঠে। আমাদের শিশু বেলায় তো আমরা নতুন জামা-জুতু কিনে লুকিয়েই রাখতাম। কেউ দেখে ফেললে তা পুরনো হয়ে যাবে, তাই। ঈদের দিন সেজেগুজে সবাইকে অবাক করে দিতাম। তবে সকাল থেকে মা বা আপুকে জ¦ালাতন করতাম আগে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য। মা যেহেতু রান্নায় ব্যস্ত থাকতেন, তাই সাজের দায়িত্ব আপুই নিত। গোসল সেরে নতুন জামা-জুতু পড়ে বসে যেতাম সাজতে। আপু চুলে সুন্দর করে ক্লিপ লাগিয়ে দিত। কি সুন্দর বাহারি সে ক্লিপ আর রাবার ব্যান্ড। সঙ্গে ম্যাচিং করে মালা, চুড়ি, কানের দুল, আরও কত কি! তখন কাঁচা মেহেদি-ই বেশি ব্যবহার করা হতো। ঈদের আগেরদিন গাছ থেকে মেহেদি পেড়ে মা বা আপু বেটে দিতেন। চাঁদরাতে আপু সুন্দর নকশা করে হাতে মেহেদি দিয়ে দিত। ঢুলুঢুলু চোখে সেই মেহেদি হাতে দিয়ে বসে থাকতাম। যত বেশি সময় রাখব, তত লাল হবে। বেশি ঘুম পেলে হাতে পলিথিন বেঁধে ঘুমিয়ে পড়তাম। সকালে দেখতাম মেহেদির রং লাল টুকটুকে হয়ে আছে। ছেলেদের সকালে ঈদের নামাজে যাওয়ার জন্যে চাই নতুন পাজামা-পাঞ্জাবি। সঙ্গে তাদের চাই চটি জুতা বা কোলাপুরি স্যান্ডেল। সঙ্গে তাদের সানগ্লাস আর হাত ঘড়িও চাই। বাবা বা বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়তে যেত তারা। এসে শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট পরে শুরু হতো বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে ঘুরতে যাওয়া। আর মেয়েদের তো সাজের অনুষঙ্গের কোনো শেষ-ই নেই। জামার সঙ্গে মিলিয়ে কাঁধে তাদের একটি ব্যাগও চাই। এখন হাতভরা থাকে টিউব মেহেদির আঁকা বিভিন্ন নকশা। পাড়াময় ঘুরে বেড়ানো শিশুদের এই ঈদ উৎসব দেখে মনে পড়ে যায় শৈশব কৈশোরের সেই ঈদের কথা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে মজাদার খাবার খেয়ে বড়দের সালাম করে সালামি নেয়ার রীতিটা আজো আছে। কয়েক বাসা ঘুরে এসে একেকজন হিসাব করে দেখে কার কত টাকা সালামি হলো।
চৈত্রের গরম চলছে এখন প্রকৃতিতে। তাই বলে ঈদে তো শিশুদের বেড়ানো থেমে থাকবে না। তাই তাদের সাজ ও পোশাক নির্বাচনে বড়দের সাবধান হতে হবে। যে রঙের পোশাকই কিনেন না কেন, তা যেন হয় আরামদায়ক। চেষ্টা করবেন সুতি, লিলেন, ভিসকস কাপড়ের মধ্যে কিনতে। বর্তমানে বড় সাইজের টি-শার্ট, শার্ট বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

×