
ছবি: সংগৃহীত
পরকীয়াকে নৈতিকভাবে ভুল মনে করলেও, বিশ্বজুড়ে এর হার ক্রমশ বাড়ছে। ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ-এর (২০২৩) তথ্যানুযায়ী, ডেনমার্কে পরকীয়ার হার সর্বোচ্চ ৪৬ শতাংশ, এর পরেই রয়েছে জার্মানি ও ইতালি (৪৫ শতাংশ)। যুক্তরাষ্ট্রে জুকারম্যান (২০২০)-এর গবেষণায় দেখা গেছে, দেশটির প্রায় ২০ শতাংশ বিবাহিত দম্পতি পরকীয়ায় জড়িয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরকীয়া অনেক ক্ষেত্রেই বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ। মারিন, ক্রিস্টেনসেন ও অ্যাটকিন্স (২০১৪)-এর গবেষণায় দেখা যায়, গোপন পরকীয়ার ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে, আর প্রকাশিত পরকীয়ার ক্ষেত্রে এই হার ৪৩ শতাংশ। যারা এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান, তাদের জন্য বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ—
১. পরিণতি বিবেচনা করুন
পরকীয়া চালিয়ে যাওয়ার আগে এর প্রভাব সম্পর্কে ভাবুন। এটি আপনার দাম্পত্য জীবন, সন্তানদের মানসিক অবস্থা ও ব্যক্তিগত স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বড় কোনো ক্ষতি হওয়ার আগেই সম্পর্ক শেষ করা বুদ্ধিমানের কাজ।
২. কর্মজীবনের ঝুঁকি পর্যালোচনা করুন
কর্মক্ষেত্রে পরকীয়ার হারও কম নয়। লাভল্যান্ড (২০১৯)-এর গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ২৫ শতাংশ কর্মী তাদের সহকর্মীদের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন। এ ধরনের সম্পর্ক কর্মজীবনে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত যখন পদমর্যাদার তারতম্য থাকে। এটি শুধু কর্মস্থলে বদনামের কারণই নয়, অনেক ক্ষেত্রে আইনি জটিলতারও সৃষ্টি করতে পারে।
৩. দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিন
অনেকেই সম্পর্ক নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভোগেন, যা তাদের পরকীয়ার দিকে ঠেলে দেয়। আপনি যদি দাম্পত্য জীবন বাঁচাতে চান, তাহলে দ্রুত পরকীয়া সম্পর্কটি ছেদ করুন এবং সম্পর্ক পুনর্গঠনে মনোযোগ দিন।
৪. পরকীয়া সঙ্গী সম্পর্কে পুনর্মূল্যায়ন করুন
একজন ব্যক্তি যদি আপনার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়াতে পারেন, তবে ভবিষ্যতে তিনি অন্য কারও সঙ্গেও একই কাজ করতে পারেন। আবেগের চেয়ে বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিন এবং সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন।
৫. সম্মানজনকভাবে সম্পর্ক শেষ করুন
অপ্রত্যাশিতভাবে হারিয়ে না গিয়ে, সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিন যে আপনি আর এই সম্পর্কে থাকতে চান না। আচমকা সম্পর্ক ছিন্ন করলে তা মানসিক কষ্ট ও অপ্রয়োজনীয় জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই নিজ সিদ্ধান্তের দায়িত্ব নিন এবং পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রেখে সম্পর্ক শেষ করুন।
পরকীয়া থেকে বেরিয়ে আসা সহজ নয়, তবে সুপরিকল্পিতভাবে সিদ্ধান্ত নিলে অপ্রয়োজনীয় ক্ষতি এড়ানো সম্ভব এবং ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা যায়।
সূত্র: https://www.psychologytoday.com/us/blog/magnetic-partners/202303/5-ways-to-get-out-of-an-extramarital-affair
আবীর