ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

ভার্চুয়াল মিটিংকে এড়িয়ে না গিয়ে যেভাবে কাজে লাগাতে পারেন

প্রকাশিত: ১৬:০০, ১৭ মার্চ ২০২৫

ভার্চুয়াল মিটিংকে এড়িয়ে না গিয়ে যেভাবে কাজে লাগাতে পারেন

ছ‌বি: সংগৃহীত

প্রতিষ্ঠানগুলো যখন এখনো 'অফিসে ফিরে আসা' নীতি নিয়ে আলোচনা করছে, তখন একটি বিষয় নিশ্চিত—ডিজিটাল যোগাযোগ দীর্ঘমেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এমনকি একই অফিসে বসবাসকারী সহকর্মীদের মধ্যেও ভার্চুয়াল মিটিং এখন কর্মদিবসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট অধ্যাপক ড. অ্যান্ড্রু ব্রডস্কি বিশ্বাস করেন, সঠিক উপায়ে ভার্চুয়াল যোগাযোগ ব্যবহারের মাধ্যমে নেতারা বিশ্বাস তৈরি করতে, সম্পর্ক দৃঢ় করতে এবং দলকে অনুপ্রাণিত করতে পারেন।

তার বই "পিং" এ ব্রডস্কি ভার্চুয়াল মিটিং আরও কার্যকর করার কৌশল তুলে ধরেছেন। এখানে চারটি মূল পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো, যা ভার্চুয়াল মিটিংকে আরও ফলপ্রসূ ও প্রাণবন্ত করতে সহায়ক হতে পারে।

১. সময় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি এড়ান

ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অনেক সময় স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বিলম্ব হয়, ফলে একে অপরের কথা কেটে কথা বলার প্রবণতা দেখা যায়। মুখোমুখি বৈঠকে শরীরী ভাষার ইঙ্গিত দেখে বোঝা যায় কখন কথা বলা উচিত, কিন্তু ভার্চুয়াল মিটিংয়ে তা সম্ভব নয়। ব্রডস্কি পরামর্শ দেন, নেতাদের উচিত প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে কিছুটা বিরতি নেওয়া। সংক্ষিপ্ত এই বিরতি শুধু কথা কাটাকাটি এড়িয়েই চলে না, বরং মনোযোগ সহকারে শোনার সংকেতও দেয়।

২. নিজের সম্পৃক্ততার প্রমাণ দিন

ভার্চুয়াল মিটিংয়ে শরীরী ভাষা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে না। আপনি যদি মিটিংয়ের সময় নোট লিখে থাকেন বা প্রাসঙ্গিক কোনো নথি দেখেন, তাহলে তা ব্যাখ্যা করা জরুরি, নতুবা আপনাকে অমনোযোগী বলে মনে হতে পারে। যেমন, সরাসরি বলে দেওয়া যেতে পারে—"জ্যাক, আমি তোমার পয়েন্টটা নোট নিচ্ছি। মিটিংয়ের শেষে এ নিয়ে আলোচনা করতে চাই,"—যা অন্যদের কাছে আপনার সম্পৃক্ততা স্পষ্ট করবে।

৩. পরিকল্পিতভাবে ক্যামেরার ব্যবহার করুন

পরিচিতদের সাথে কাজের মিটিংয়ে ক্যামেরা বন্ধ রাখলেও চলে, তবে নতুন সদস্যদের সাথে সম্পর্ক গড়তে ক্যামেরা চালু রাখা গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্রমাগত ক্যামেরা ব্যবহার মানসিক চাপ ও ক্লান্তি তৈরি করতে পারে। তাই দলনেতারা পরিষ্কার নির্দেশনা দিতে পারেন—যখন সম্পর্ক গড়ার প্রয়োজন, তখন ক্যামেরা চালু রাখুন, কিন্তু গভীর কাজের সময় এটি বন্ধ রাখার অনুমতি দিন।

৪. সংযোগ তৈরির জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করুন

ভার্চুয়াল পরিবেশ সম্পর্ক গড়ার একটি সুযোগ হতে পারে। ব্যাকগ্রাউন্ডে বই, শিল্পকর্ম বা প্রিয় পোষা প্রাণীর ছবি রাখা আলোচনার বিষয়বস্তু তৈরি করতে পারে এবং পারস্পরিক সংযোগ বাড়াতে পারে। ব্রডস্কি মনে করেন, সাধারণ শখ বা আগ্রহের ভিত্তিতে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। তাই নেতাদের উচিত তাদের কর্মক্ষেত্রের ব্যাকগ্রাউন্ড এমনভাবে সাজানো, যা তাদের ব্যক্তিত্বের পরিচয় দেয় এবং অন্যদের সাথে সহজে যোগাযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে।

যেহেতু ডিজিটাল যোগাযোগ আধুনিক কর্মস্থলের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠছে, তাই এর সঠিক ব্যবহার একটা দল পরিচালনার দক্ষতা বাড়াতে পারে। ভার্চুয়াল মিটিংকে বাধা নয়, বরং সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করলে তা আরও কার্যকর ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।

আবীর

×