
ছবি: সংগ্রহীত
ফিলিপাইন এবং ভিয়েতনামে গভীর জঙ্গলে ত্রাগাকান্থ (Snow Swallow) নামক এক প্রজাতির গাছ রয়েছে। শ্রমিকরা বিশাল আকৃতির এই গাছ থেকে সংগ্রহ করেন একধরনের প্রাকৃতিক আঠা, যা দিয়ে তৈরি করা হয় স্বাস্থ্যকর চিনি।
ত্রাগাকান্থ গাছের গায়ে করা ছোট ছোট ছিদ্র থেকে বের হয়ে আসে চকচকে, নরম জেলির মতো দেখতে রেজিন বা নির্যাস। শ্রমিকরা গাছের গায়ে প্লাস্টিকের বোতল লাগিয়ে তাতে মিষ্টিজাতীয় পাতলা এই জেলি সংগ্রহ করেন। স্বাভাবিকভাবেই গাছ থেকে বের হওয়া এই জেলি (রেজিন) চিনির তুলনায়ও বেশি মিষ্টি এবং স্বাস্থ্যের জন্যও সম্পূর্ণ নিরাপদ।
সংগ্রহের পর তা রোদের তাপে শুকিয়ে আরও ঘন করা হয়। নির্দিষ্ট আকার ধারণ করলে তা কেটে ছোট ছোট টুকরো করা হয়। এই টুকরোগুলোই পরে ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন খাবার তৈরিতে চিনির বিকল্প হিসেবে।
এছাড়া এগুলো দিয়ে তৈরি হয় বিশেষ একধরনের সেক (পানীয়), যা ফিলিপাইনে খুবই জনপ্রিয়। সেকটি বানানোর জন্য কঠিনাকার রেজিনকে গুঁড়ো করে পানির সাথে মেশানো হয়। মিশ্রণটি দেখতে জেলির মতো হয় এবং এর স্বাদও অত্যন্ত মিষ্টি।
স্বাদে মিষ্টি হলেও পানীয়টি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। কারণ তাতে ব্যবহৃত রেজিন বা নির্যাস প্রাকৃতিকভাবেই আমিষের ভালো উৎস। শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী এই পদার্থটি স্বাথ্যকর ও নিরাপদও বটে।
প্রাকৃতিক উপায়ে সংগ্রহ করায় এবং কোনো রাসায়নিক প্রক্রিয়া ব্যবহার না করায় এটি স্বাস্থ্যের ওপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। তাই ইতোমধ্যে চিনি বা অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় খাবারের স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এটি।
প্রকৃতি যে কত অমূল্য সম্পদের ভাণ্ডার, তার স্পষ্ট উদাহরণ 'স্নো সোয়ালো' গাছের এই মিষ্টিজাতীয় নির্যাস। স্থানীয়দের কাছে এই নির্যাস থেকে চিনি প্রক্রিয়াকরণ শুধু জীবিকার একটি মাধ্যম নয়, বরং এটি তাদের খাদ্য সংস্কৃতিরও এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সূত্র: https://tinyurl.com/4jwydzsu
রাকিব