
.
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর ও নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ টাকার জাল নোট এবং জাল নোট তৈরির সরঞ্জামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- সুমন, সুলতানা ও হানিফ গাজী। পুলিশ জানিয়েছে, আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বাজারে এ জাল নোট সরবরাহ করা হয়েছে।
শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন।
ডিসি মো. জসীম উদ্দীন বলেন, গত ১৩ মার্চ কামরাঙ্গীরচর ও নারায়ণগঞ্জে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে ২০ লাখ টাকার জাল নোট, আংশিক প্রিন্ট করা ৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকার জাল নোট ও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। একটি এ-ফোর সাইজের কাগজে চারটি এক হাজার টাকার নোট তৈরি করত কারবারিরা। এরপর নিজেরাই বাজারে সরবরাহ করত। তারা দীর্ঘদিন ধরে জাল নোট তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে আসছে। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ জাল নোট তৈরি করে তারা সেগুলো সরবরাহ করার জন্য নিজেদের হেফাজতে রেখেছিল। ডিসি লালবাগ বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া একটায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, একজন জাল টাকার ব্যবসায়ী জাল নোটসহ মাদবর বাজার ঘাটের দিকে যাচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে মাদবর বাজারের বুড়িগঙ্গা গণপাঠাগার সমাজকল্যাণ সংস্থার সামনে বেড়িবাঁধে চেকপোস্ট পরিচালনা করে কামরাঙ্গীরচর থানার একটি টিম। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে সুমন, সুলতানা ও হানিফ গাজীকে আটক করা হয়। পরে তাদের তল্লাশি করে ১০০০ ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের মোট চার লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়।
পরে গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কদমতলীর গ্যাস লাইন নামক এলাকায় গ্রেপ্তার সুমনের ভাড়া বাসা থেকে ১০০০ ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের ১৬ লাখ টাকার জাল নোট, এক পাশে প্রিন্ট করা ১০০০ টাকা মূল্যমানের ৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকার জাল নোট (আংশিক প্রিন্ট করা), একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, একটি কালার প্রিন্টার, জাল নোট তৈরির ১০টি ডাইস, তিনটি আঠার কৌটা, জাল নোট তৈরিতে ব্যবহৃত দুটি ফয়েল পেপার রোল, কালার প্রিন্টারের পাঁচটি কালির কৌটা, একটি রাবার কাটার, কাগজ ছিদ্র্র করার দুটি ভাইস ও জাল নোট তৈরির কাজে ব্যবহৃত এক বস্তা সাদা কাগজ উদ্ধার করা হয়।
আটক তিনজনের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে ডিসি জসীম উদ্দীন বলেন, জাল নোট কারবারিদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়ে থাকে। এই অপরাধ কিন্তু জামিনযোগ্য নয়।
রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, আটক প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই জাল নোট তৈরি ও বিক্রি করার অপরাধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত রিমান্ডে এনে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।