ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

শেষ মুঘল সম্রাটের সরাসরি বংশধর অসহায় দারিদ্র্যের শিকার হয়ে বেঁচে আছেন

প্রকাশিত: ১৮:৪৯, ১৫ মার্চ ২০২৫

শেষ মুঘল সম্রাটের সরাসরি বংশধর অসহায় দারিদ্র্যের শিকার হয়ে বেঁচে আছেন

ছ‌বি: সংগৃহীত

অবিভক্ত ভারতের রাজকীয় অতীত ছিল ঐশ্বর্যে ভরা, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক রাজবংশের বংশধররা হারিয়েছেন তাঁদের ক্ষমতা ও ঐশ্বর্য। এমনই এক করুণ গল্প সুলতানা বেগমের, যিনি অবিভক্ত ভারতের শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের প্রপৌত্রবধূ। বর্তমানে ৬০ বছর বয়সী সুলতানা কলকাতার হাওড়া অঞ্চলের একটি সঙ্কীর্ণ দুই-কামরার ঘরে দিন কাটান, যা তাঁর পূর্বপুরুষদের রাজকীয় জীবনের সম্পূর্ণ বিপরীত।

সুলতানার পূর্বপুরুষ বাহাদুর শাহ জাফর ছিলেন ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের প্রতীকী নেতা। বিদ্রোহ ব্যর্থ হলে ব্রিটিশরা তাঁকে বার্মায় নির্বাসিত করে, যেখানে তিনি ১৮৬২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর মুঘল রাজবংশের উত্তরসূরিরা সম্পূর্ণ অবহেলিত থেকে যান, রাজকীয় মর্যাদা হারিয়ে দারিদ্র্যের মুখোমুখি হন।

১৯৮০-এর দশকে স্বামী প্রিন্স মির্জা বেদার বখতের মৃত্যুর পর সুলতানার জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। ছয় সন্তানের দায়িত্ব নিতে গিয়ে তাঁকে মাত্র ৬,০০০ টাকা মাসিক পেনশনে চলতে হয়, যা সংসার চালানোর জন্য একেবারেই অপ্রতুল। তিনি বহুবার সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন, কিন্তু আশানুরূপ কোনো সহায়তা পাননি।

পরিবার চালানোর জন্য তিনি চায়ের দোকান এবং মহিলাদের পোশাক তৈরির ব্যবসা শুরু করেছিলেন, কিন্তু তা থেকে পর্যাপ্ত আয় হয়নি। কিছু মানবাধিকার সংগঠন ও এনজিও তাঁকে সহায়তা করেছে, যা তাঁর রাজকীয় রক্তধারা ও বর্তমান দুর্দশার মধ্যে ব্যাপক বৈপরীত্য তুলে ধরে।

ভারতের শেষ মুঘল সম্রাটের সরাসরি বংশধর হয়েও সুলতানা বেগম আজ অসহায় দারিদ্র্যের শিকার। তাঁর জীবন কেবল ব্যক্তিগত দুর্ভোগের কাহিনি নয়, বরং এটি ভারতীয় ইতিহাসের সেই অধ্যায়ের প্রতিফলন, যেখানে একসময়ের রাজারা আজ পরিণত হয়েছেন সাধারণ মানুষের চেয়েও অবহেলিত এক জনগোষ্ঠীতে।



তথ্যসূত্র: https://timesofindia.indiatimes.com/etimes/trending/sultana-the-great-granddaughter-of-mughal-emperor-bahadur-shah-zafar-reduced-to-a-life-of-poverty-she-is-alive-and-lives-here-in-india/articleshow/118982180.cms

আবীর

×