
এক ছেলে ও তিন কন্যাসন্তান
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার শুটিয়া গ্রামের মোদাচ্ছের আলী তরফদার ও সুমাইয়া আক্তার সুইটি দম্পতির ঘরে একসঙ্গে চার সন্তান জন্ম নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে যশোরের আদ্ দ্বীন সকিনা মেডিকেল হাসপাতালে সুইটি এক ছেলে ও তিন কন্যাসন্তান জন্ম দেন। ছেলের নাম রাখা হয়েছে সিয়াম, তবে মেয়েদের নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
মোদাচ্ছের আলী তরফদার, যিনি পেশায় একটি সিরামিক কোম্পানির মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ অফিসার, জানান যে তারা একসঙ্গে চার সন্তান পেয়ে অত্যন্ত খুশি, তবে কিছুটা অবাকও হয়েছেন। কারণ, গর্ভাবস্থায় করা আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে মাত্র দুইটি শিশুর অস্তিত্ব দেখা গিয়েছিল। দুইবার পরীক্ষা করার পরও একই ফলাফল আসে। কিন্তু সিজারের সময় সবাইকে চমকে দিয়ে একে একে চারটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।
সন্তানদের দাদা আব্দুর রাজ্জাক তরফদার বলেন, "বিয়ের তিন বছর পর আমার ছেলের ঘরে একসঙ্গে চারটি সন্তান এসেছে। আমরা মধ্যবিত্ত পরিবার হলেও এই আনন্দ অসীম। আল্লাহ আমাদের সুস্থ-সবল চারটি সন্তান দিয়েছেন, এর চেয়ে বড় খুশির খবর আর কিছু হতে পারে না।"
সন্তানদের বাবা মোদাচ্ছের আলী তরফদার বলেন, "একসঙ্গে চারটি সন্তান পেয়ে আমরা খুব খুশি। তবে মধ্যবিত্ত পরিবার হওয়ায় তাদের লালনপালন নিয়ে কিছুটা চিন্তিত। তবুও আমি আশা করি, আমার সন্তানদের কোনো কষ্ট হবে না।"
মা সুমাইয়া আক্তার সুইটি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, "আল্লাহ আমাদের পরিবারে একসঙ্গে চারটি সন্তান দিয়েছেন, আমি অত্যন্ত খুশি। অল্প বয়সে প্রথম মা হয়েছি। একজন মায়ের জন্য একটি সন্তানের জন্ম দেওয়া যেমন আনন্দের, চারটি সন্তান জন্ম দেওয়াও তেমনই আনন্দের। প্রথমে ভেবেছিলাম দুই সন্তান হবে, কিন্তু চারজন এসেছে। এটি সত্যিই আল্লাহর বিশেষ রহমত। আমার সন্তানদের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।"
আদ্ দ্বীন সকিনা মেডিকেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স তাসলিমা খাতুন জানান, মা ও নবজাতকরা সুস্থ আছেন এবং তাদের হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক মঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, "নবজাতকদের শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে, তবে চারটি সন্তান হওয়ায় মা ও শিশুদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে মাত্র দুইটি শিশুর অস্তিত্ব দেখা গিয়েছিল। কিন্তু জন্মের সময় মোট চারটি সন্তান পাওয়া যায়। যদিও এটি বিরল ঘটনা, তবে অসম্ভব নয়।"
মোদাচ্ছের দম্পতির পরিবার নতুন অতিথিদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত, তবে চার শিশুর লালনপালন নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায়ও রয়েছে। বিরল এই ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্বজন ও স্থানীয়রা পরিবারটিকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন এবং নবজাতকদের সুস্থতা কামনা করছেন।
সায়মা ইসলাম