ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

ইঁদুর-কাঠবিড়ালির অভিভাবক কামাল হোসেন

প্রকাশিত: ২২:২৬, ১১ মার্চ ২০২৫

ইঁদুর-কাঠবিড়ালির অভিভাবক কামাল হোসেন

ছবিঃ সংগৃহীত

চারুকলার সামনের রাস্তায় প্রতিদিন দেখা যায় এক অদ্ভুত দৃশ্য—এক ব্যক্তি আয়-আয় বলে ডেকে ম্যানহোলে থাকা ইঁদুরদের খাবার খাওয়াচ্ছেন। পথচারীরা থমকে দাঁড়ান এই ব্যতিক্রমী দৃশ্য দেখে। তিনি কামাল হোসেন সেন্টু, যিনি ১৩ বছর ধরে এখানে মালা বিক্রি করেন। তবে গত দেড় বছর ধরে তিনি শুধু মালা বিক্রেতা নন, কিছু বিশেষ অতিথির জন্য অভিভাবক হয়ে উঠেছেন।

কামাল হোসেন বলেন, "যখন ওরা খায়, তখন একটা অদ্ভুত আনন্দ পাই, মনে শান্তি লাগে। অনেক সময় দেখি ওরা আমার কাছে আসে, খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে। যদি একদিন খাবার না আনি, তখন কষ্ট লাগে।"

ইঁদুর, কাঠবিড়ালি আর চরুইপাখি—এরা এখন তার প্রতিদিনের অতিথি। পোলাও চালের খুদ, পরোটার টুকরো—সবই তিনি তাদের জন্য নিয়ে আসেন। বলেন কামাল হোসেন,"আয়-আয়" বলে ডাক দিলে ছুটে আসে তারা, যেন এক অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধা।"

তিনি আরও বলেন, "অনেকে ইঁদুরকে শত্রু ভাবে, মেরে ফেলে। কিন্তু ক্ষুধার কারণেই ওরা মানুষের বিরক্তি তৈরি করে। আমি যখন ওদের খাওয়াই, তখন মনে হয়, আমি একটা ভালো কাজ করছি।"

তবে সম্প্রতি লোক সমাগম বৃদ্ধি ও কিছু মানুষের দুর্ব্যবহারের কারণে কাঠবিড়ালিরা কাছে আসতে ভয় পাচ্ছে বলে জানান কামাল হোসেন। "অনেকে ভিডিও করে, কেউ কেউ ধাওয়া দেয়, এতে ওরা ভয় পায়। এটা দেখে মন খারাপ লাগে," বলেন তিনি।

কামাল হোসেন শুধু মালা বিক্রি করেন না, তিনি বিক্রি করেন ভালোবাসা ও মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। প্রাণীদের প্রতি মমতা, প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসাই আমাদের মানবতার আসল পরিচয়। তার এই উদ্যোগ আমাদের শেখায়, সত্যিকারের ভালোবাসা শুধু মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণীর প্রতিও ছড়িয়ে দেওয়া যায়।

সূত্রঃ https://www.youtube.com/watch?v=WA1Kpei5-Cg

ইমরান

×